- সারাদেশ
- সিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ
ভোটের ফল বাতিলের দাবি
সিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ

সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘোরাও।
সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ফলাফল বাতিলের দাবি ও ভোটগ্রহণে নানা অনিয়মের প্রতিবাদে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘোরাও করার ঘটনা ঘটেছে। অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ এবং জেলা প্রশাসকের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়।
আজ রোববার দিনভর ওই ওয়ার্ডের কোরবানটিলা, নালিয়া, ডলিয়া, সরিষাকান্দিসহ ৮টি এলাকার ভোটারদের একাংশ এ বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে স্মারকলিপি প্রদান করেন পরাজিত প্রার্থীরা। ওই সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
এর আগে শনিবার পার্শ্ববর্তী খাদিমনগর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে সুবিধা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিজয়ী করার অভিযোগে পরাজিত দুই নারী ও এক পুরুষ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ওই দিন শতাধিক সমর্থক নিয়ে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
রোববার দুপুরে টুকেরবাজারের ৩নং ওয়ার্ডের তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসা নালিয়া কেন্দ্রের আওতাধীন ৮টি এলাকার ভোটাররা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করেন। সুযোগ না পেয়ে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অফিস ঘেরাও করে রাখেন। পরে বৈঠক করে স্মারকলিপি প্রদান করেন ভোটাররা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী সিরাজ মিয়া ফুটবল প্রতীক নিয়ে ১ ভোটের ব্যবধানে টিউবয়েল প্রতীকের প্রার্থীর কাছে হেরে যান। ওই ওয়ার্ডের সেলিনা বেগম নামের আরেক সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীও পরাজিত হন। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তারা সুবিধা নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে পরাজিত দেখিয়েছেন। স্মারকলিপিতে ৯টি অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দিন সকাল ৮টার পরিবর্তে ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরু, কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার প্রভাষক মো. রেজাউর রহমান ফলাফল শিটে জোর করে এজেন্টদের স্বাক্ষর দিতে চাপ প্রয়োগ, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টা আগেই ফুটবল মার্কার সকল পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া, ফুটবল মার্কার প্রার্থীকে ৭ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী ঘোষণা করার পর আবার ১ ভোটে পরাজিত দেখানো, বেশ কিছু ভোটার ভোট দিতে না পারা ইত্যাদি। স্মারকলিপিতে ফলাফল বাতিল করে টুকেরবাজার ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, বিক্ষোভকারীরা বেলা ২টার দিকে জেলা প্রশাসকের গাড়ি আটকে দেয়। দুই পরাজিত প্রার্থীকে নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখার আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে, সিলেট সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে খাদিমনগর ও টুকেরবাজার ইউনিয়নের একাধিক ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন কেন্দ্রে ও বুথে ভোটগ্রহণে অনিয়ম ও এর সঙ্গে প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসাররা জড়িত বলে অভিযোগ করেন সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী মীনা বেগম ও সমলা বেগম। তারা ওইদিন স্মারকলিপিতে এসব অভিযোগ করেন। একই অভিযোগে স্মারকলিপি দেন খাদিমনগরের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ইলিয়াস আলীও। এ তিন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা স্মারকলিপি প্রদান শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ ছাড়া শুক্রবার রাতে টুকেরবাজারের ৩ নং ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী সিরাজ মিয়া এক ভোটে ফেল করায় ফলাফল বাতিল দাবি করে এলাকায় মানববন্ধন করেন। ওইদিন এক এজেন্টের ওপর হামলাও করেন তার লোকজন।
মন্তব্য করুন