সিলেটে সদ্য অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে একটি ওয়ার্ডের ফলাফল বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। তাঁরা ভোট গ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে গতকাল রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেন। সেখানে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকরা। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) মজিবর রহমান বিক্ষোভকারীদের পাঁচ বছর পর আসার জন্য বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনকারীরা তাঁর গাড়ি আটকে দেন।

খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিকেলে প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা ফিরে যান। কর্মসূচিতে অংশ নেন সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী ও তাঁদের ভোটাররা।

এর আগে শনিবার একই অভিযোগে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে সুবিধা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিজয়ী করার অভিযোগে পরাজিত দুই নারী ও এক পুরুষ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী সিরাজ মিয়াকে ১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত দেখানো হয়েছে। একই ওয়ার্ডের সেলিনা বেগমকেও পরাজিত দেখানো হয়। নির্বাচন কর্মকর্তারা সুবিধা নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এ কাজ করেন। ওয়ার্ডের ফলাফল বাতিলের দাবিতে প্রার্থীসহ দুই শতাধিক ভোটার দুপুর থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তাঁরা প্রথমে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দেখা করতে না পেরে বিক্ষোভ করেন। বেলা ২টার দিকে জেলা প্রশাসক বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।

বিকেলে আবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ পুলিশ কর্মকর্তারা। বৈঠকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দিন সকাল ৮টার পরিবর্তে ৯টায় ভোট গ্রহণ, কেন্দ্রের প্রিসাইডিং রেজাউর রহমান ফলাফল শিটে জোর করে এজেন্টদের স্বাক্ষর দিতে চাপ প্রয়োগ, ফুটবল মার্কার সব পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া, ফুটবল মার্কার প্রার্থীকে ৭ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী ঘোষণা করার পর আবার ১ ভোটে পরাজিত দেখানো, ভোট দিতে না পারা ইত্যাদি অভিযোগ করা হয়। স্মারকলিপিতে ফলাফল বাতিল করে টুকেরবাজার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকা এসএমপির উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানিয়েছেন, পরাজিত প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখার আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে। এদিকে এর আগে শনিবার খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন কেন্দ্রে ও বুথে ভোট গ্রহণে অনিয়ম ও এর সঙ্গে প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসাররা জড়িত বলে অভিযোগ  উঠেছে।