- সারাদেশ
- কমলগঞ্জে বাগান থেকে চুরি হচ্ছে ছায়াবৃক্ষ
কমলগঞ্জে বাগান থেকে চুরি হচ্ছে ছায়াবৃক্ষ
চা উৎপাদনে প্রভাব পড়ার শঙ্কা

কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন চা বাগান থেকে বিলীন হচ্ছে শেডট্রি বা ছায়াদানকারী বৃক্ষ। টিলাভূমিতে ছায়াবৃক্ষ অতিবৃষ্টি ও প্রখর রোদের কবল থেকে চা-গাছকে রক্ষা করে। টিলার মাটির ক্ষয়রোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে দিন দিন বাগান থেকে শেডট্রি উজাড় হওয়ায় চায়ের উৎপাদনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরেই একটি মহল চা বাগান থেকে রাতের আঁধারে গাছ কেটে পাচার করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে সামাজিক বনায়ন থেকেও হরহামেশা গাছ চুরি হচ্ছে। পুলিশের কাছে বাগান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করলেও এই গাছ কাটা বন্ধ হচ্ছে না।
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর, দেওছড়া, ডবলছড়া, কানিহাটি, আলীনগর, কামারছড়া, কুরমা, সুনছড়া, বাঘিছড়াসহ বিভিন্ন চা বাগানে পুরোনো ও বৃহদাকার শেডট্রিতে ভরপুর। কড়ই, আকাশিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালিতে টিলাভূমি পরিপূর্ণ। জানা গেছে, একটি চক্র প্রতিনিয়ত রাতের আঁধারে চা বাগান থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। চা বাগানের পার্শ্ববর্তী অসংখ্য স’ মিলে নিয়ে এই গাছগুলো চেরাই করা হয়। সম্প্রতি দেওছড়া চা বাগানের বিভিন্ন সেকশন থেকে ছায়াবৃক্ষ চুরির অভিযোগ উঠেছে।
চা শ্রমিকদের অভিযোগে জানা যায়, গাছ চোর চক্র অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাতের আঁধারে হরদম গাছ চুরি করে নিয়ে যায়। চা বাগানের কতিপয় কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পাহারাদারদেরও এসব ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে তাদের ধারণা। পঞ্চায়েত নেতারা জানান, গাছ চুরি হয়ে যাওয়ায় টিলাগুলো বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে। এ জন্য চা গাছেও ছায়া থাকবে না। ফলে বাগানের ও শ্রমিকদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে তাঁরা বাগান কর্তৃপক্ষকে বলেছেন।
শমশেরনগর কানিহাটি চা বাগানের চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, দেওছড়া, শমশেরনগর, কানিহাটি, কুরমা, বাঘিছড়াসহ বিভিন্ন চা বাগান থেকে দীর্ঘদিন ধরে মূল্যবান গাছ চুরি হচ্ছে। ছায়াবৃক্ষ না থাকলে চা গাছ থেকে সঠিক পরিমাণ চা পাতা জন্মাবে না, চায়ের গুণগত মানও ঠিক থাকবে না। ফলে উৎপাদন হ্রাস পাবে। তাই কালবিলম্ব না করে ছায়াবৃক্ষ নিধনকারীদের অচিরেই চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে চা বাগান খুব অল্প সময়ের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে।
শমশেরনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, চা বাগান থেকে দীর্ঘ সময় ধরেই গাছ চুরির ঘটনা ঘটছে। বাগানের বহিরাগত গাছচোরেরা মাঝেমধ্যে চুরি করে। তবে গাছ চুরির বিষয়ে থানা পুলিশকে অবগত করা হচ্ছে এবং বাগানে চৌকিদার ও পঞ্চায়েত নেতাদের নিয়ে ঘনঘন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারপরও গাছ চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ওসি শামীম আকনজি বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন