- সারাদেশ
- জোয়ারে ভেসে আসা ‘শিশু’ পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর
জোয়ারে ভেসে আসা ‘শিশু’ পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর
রাঙামাটি ও সীতাকুণ্ডে কাল হস্তান্তর করা হবে ৫৫৯টি

সীতাকুণ্ডের জঙ্গলভাটিয়ারীতে প্রস্তুত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর -সমকাল
ঘূর্ণিঝড়ের সময় জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছিল এক বছরের শিশু। অ্যালুমিনিয়ামের বড় গামলায় ছিল শিশুটি। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে সীতাকুণ্ড উপকূলে ভেসে আসা সেই শিশু এখন ৩ সন্তানের জনক। তিনি পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় চতুর্থ পর্যায়ের ঘর আগামীকাল বুধবার হস্তান্তর করা হবে। রাঙামাটি ও সীতাকুণ্ডে হস্তান্তর করা হবে মোট ৫৫৯টি ঘর।
জোয়ারে ভেসে আসা মোহাম্মদ মুসলিমের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। এখন সুন্দর একটি ঘর পেতে যাচ্ছেন। গতকাল সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, সীতাকুণ্ডে ১২০টি ঘর দুই শতক ভূমিসহ দেওয়া হবে। ঘরে বসবাসকারীরা পাবেন বিদ্যুৎ, পানি, শৌচাগারসহ সব সুবিধা। ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন বলেন, জঙ্গলভাটিয়ারীতে ১২০ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছে।
‘আকাশে কালো মেঘ দেখলে ও সামান্য বৃষ্টি নামলে বাঁশের বেড়ার কুঁড়েঘরে থাকতে খুব ভয় লাগতো। ভয়ে পরিবারের লোকজনদের নিয়ে অন্যদের ঘরে আশ্রয় নিতে হতো। এখন সেই ভয় কেটে গেছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে’। গতকাল সোমবার সমকালকে এসব কথা বলছিলেন রাঙামাটির নানিয়ারচরের দুর্গম ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের দাজ্যছড়া গ্রামের দিনমজুর নয়ন চাকমা। একই ইউনিয়নের দুর্গম পশ্চিম হাচাছড়ি গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব অন্ধ গোপাল কৃষ্ণ চাকমা বলেন, ‘এর আগে ভাঙা বেড়ার কুঁড়েঘরে থাকতাম। এখন আধাপাকা ঘর পেয়ে খুব খুশি। প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণভরে আশীর্বাদ জানাচ্ছি’।
নানিয়ারচর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সপ্তর্ষী সাহা জানান, উপজেলার দুর্গম এলাকায় গিয়ে প্রত্যেক উপকারভোগীর বিষয়ে যাচাই করে ঘর দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি স্পটে প্রতিবন্ধী, বিধবা, অন্ধ ও অসহায় বৃদ্ধদের জন্য ২৭টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি দশটি উপজেলায় প্রথম পর্যায় থেকে চতুর্থ পর্যায়ে ১ হাজার ৯১৬টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ৪০ কোটি সাতান্ন লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিবন্ধী, স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, অতি দরিদ্র নারীরা কর্মসূচির প্রধান উপকারভোগী। ইতোমধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১ হাজার ৪৭৭টি ঘর পেয়েছেন উপকারভোগীরা। চতুর্থ পর্যায়ে ৮টি উপজেলায় নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪৩৯টি ঘর আগামীকাল হস্তান্তর করা হবে। চতুর্থ পর্যায়ে ঘরের মধ্যে রয়েছে রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৮৪টি, বাঘাইছড়িতে ৮০টি, লংগদু উপজেলায় তৃতীয় পর্যায়ের ৪০টি ঘরসহ ৮৩টি, নানিয়ারচরে ২৭টি, বরকলে ৪০টি, রাজস্থলীতে ১৪টি, জুরাছড়িতে ৭০টি ও কাউখালী উপজেলায় ৪১টি।
মন্তব্য করুন