বগুড়া শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা যানজট। এর সমাধানে আগের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হলেও আবারও নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। সড়কের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় স্থানান্তর করা হবে।  বুধবার থেকে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হচ্ছে।

এ উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আকতার। তিনি বলেন, নতুন উদ্যোগ যে কোনো মূল্যে কার্যকর করা হবে। শহরের ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে কয়েকটি এলাকায় যানজট নিরসনে সভা করেছি। সবার সহযোগিতা চাচ্ছি।

সম্প্রতি বগুড়া শহরে যানজট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পাঁচ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। নতুন উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, শহরের ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো নির্দিষ্ট তিনটি স্থানে স্থানান্তর করা হবে। শেরপুর রোড ও জলেশ্বরীতলা রোডের দোকান আলতাফুননেছা খেলার মাঠ, শহরের সাতমাথা থেকে তিনমাথা পর্যন্ত দোকানগুলোকে রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের দক্ষিণে এবং থানা রোড, বড়গোল-রাজাবাজার রোড ও ফতেহ আলী বাজার রোডের দোকানগুলোকে চেলোপাড়া চাষি বাজারে বসানো হবে। শহরের সড়কের ফুটপাতে কোনো দোকান বসতে দেওয়া হবে না।

এ ছাড়া শহরের চলাচলরত ইজিবাইক ও অটোরিকশা কমানো হবে। শহরের ফুটপাতে মোটরসাইকেল পার্ক করলেই জরিমানা গুনতে হবে। শহরের মধ্যে করতোয়া গেটলক বাস চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে।

শহরের কালীতলা এলাকার বাসিন্দা সুলতানা বেগম বলেন, তাঁর মেয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। যানজটের কারণে এক কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। শহরের শিববাটি এলাকায় কোম্পানিতে কর্মরত জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, সকাল ৯টায় অফিসে হাজিরা দেওয়া লাগে। কিন্তু সাতমাথা থেকে দত্তবাড়ি পর্যন্ত প্রচণ্ড যানজট পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় ৪০ মিনিট। প্রায়ই অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ১০ সদস্যবিশিষ্ট যানজট নিরসন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটি পরে আর কাজ করেনি। এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা ইয়াসমিন বলেন, আগের কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে সম্প্রতি নতুন কমিটি করেছি। এই কমিটি কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।

সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় যানজট নিরসনে করতোয়া নদীর ওপরে সেতুর আদলে রাস্তা নির্মাণের প্রস্তাব করেন বগুড়া-৬ সদর আসনের এমপি রাগেবুল আহসান রিপু। তাঁর দাবি, ৯ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করলে যানজট নিরসন করা সম্ভব। তিনি বিষয়টি জাতীয় সংসদে তুলে ধরবেন বলেও জানান।

শহরের দত্তবাড়ি, বড়গোলা, থানা মোড়, সাতমাথা, খান্দার, ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়, রেলগেট, নামাজগড়, টিনপট্টি মোড়, বনানী মোড়, তিনমাথা রেলগেট, চেলোপাড়া মোড়ে যানজট লেগেই থাকে। প্রথম বাইপাস রোডের তিনমাথা রেলগেট ও আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন চারমাথা, বনানী, মাটিঢালী এলাকায় মহাসড়কে যানজট সবচেয়ে বেশি।