ঠাকুরগাঁওয়ের মোলানী গ্রামের সলেমান আলী ২০১৩ সাল থেকে কৃষির পাশাপাশি সোলার আইপিএস তৈরি করছেন। দেশে সৌর সেচযন্ত্র চালু হওয়ার পর প্রযুক্তি সহজলভ্য করায় মনোযোগ দেন তিনি। কারণ এ সেচযন্ত্র সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। সমস্যাটির দারুণ এক সমাধানও বের করেছেন।

 নিজের উদ্ভাবনী চিন্তা কাজে লাগিয়ে সলেমান তৈরি করেন ভ্রাম্যমাণ সৌর সেচ পাম্প। এ সেচযন্ত্রের নির্মাণ ব্যয় কম, দামও কৃষকের সাধ্যের মধ্যেই। বহনযোগ্য বলে বিভিন্ন স্থানে ও ফসলের ক্ষেতে নিয়ে সেচ দেওয়া সম্ভব এর মাধ্যমে।

বোরো মৌসুমে ডিজেলের চড়া দাম বা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। এ চিন্তা কিছুটা লাঘব হয়েছে সৌর সেচ প্রযুক্তিতে। কিন্তু এ প্রযুক্তি ব্যয়বহুল হওয়ায় কৃষকদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন কৃষক সলেমান। তাঁর ভ্রাম্যমাণ সৌর সেচযন্ত্রের কারণে এখন কৃষকের তেলের দাম বা বিদ্যুৎ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

সলেমান জানান, আটটি প্যানেলের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৬৪০ ওয়াট। এতে চলে তিন হর্স পাওয়ারের পাম্প। মিনিটে পানি পাওয়া যায় ৭০০ লিটার। তৈরিতে ব্যয় হয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিক্রি করছেন ১ লাখ ৮০ হাজারে।

ইসলামনগর এলাকার মৎস্য খামারি নুরজামান বলেন, ছয়টি সোলার সেচ পাম্প কিনে পুকুরের কাজে ব্যবহার করছেন। পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে না। মোলানী গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, বিদ্যুৎ বা ডিজেলচালিত যন্ত্রে বিঘাপ্রতি সেচে খরচ সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। সৌরযন্ত্রে খরচ ২ হাজার টাকার মতো।

কৃষক সলেমান আলী বলেন, ৫০টি সৌর সেচ পাম্প বিক্রি করেছেন তিনি। ঋণ নিয়ে নিজে ২৩টি সেচ পাম্প দিয়ে তিন শতাধিক চাষির ৪০০ একর জমির সেচের চাহিদা পূরণ করছেন। আরও নতুন নতুন যন্ত্র তৈরির বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আলমগীর হোসেন জানান, সলেমান স্বল্প খরচে সৌর সেচ পাম্প তৈরি করে অন্যদেরও সুবিধা দিচ্ছেন। এটি সরকারের নীতি সহায়তার আওতায় আনলে সবাই উপকৃত হবে।