রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহলের অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য আর শিল্পদূষণে আক্রান্ত সুন্দরবন। বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, পরিকল্পিত আগুন ও বন্যপ্রাণী হত্যা এবং প্লাস্টিক ও শিল্পদূষণে বিপর্যস্ত বনটি। পশুর নদে কলকারখানা ও জাহাজের বর্জ্য নিক্ষেপ, কয়লা ও তেলবাহী জাহাজডুবির মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য হুমকিতে রয়েছে। বাংলাদেশের ফুসফুস বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। সুন্দরবনের ঢাংমারিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও ঢাংমারি ডলফিন সংরক্ষণ দলের আয়োজনে এবং বনজীবীদের অংশগ্রহণে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

‘করব বন সংরক্ষণ, সুস্থ থাকব সারাক্ষণ’ স্লোগানে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাপার কেন্দ্রীয় নেতা পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখ। বক্তব্য দেন ঢাংমারি ডলফিন সংরক্ষণ দলের টিম লিডার ইস্রাফিল বয়াতি, বাপা নেতা শেখ রাসেল, হাছিব সরদার, বনজীবী স্টিফেন হালদার, বেল্লাল ব্যাপারী, সাথী আদিত্য, মধুসূদন মণ্ডল, লিপি বেগম, কল্পনা সরদার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পুরো সুন্দরবন ও সংলগ্ন নদনদী প্লাস্টিকে সয়লাব হয়ে গেছে। গবেষণায় সুন্দরবনের মাছে ক্ষতিকর মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা মিলেছে। ২০ বছরে ২৪ বার আগুনে ৭১ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহল ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগায়।

বক্তারা আরও বলেন, বন রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরগুলো যদি দায়িত্ব পালনে সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দেয় এবং তারা যদি প্রকৃতিপ্রেমী না হয়, তাহলে অচিরেই সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁরা সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকা থেকে প্রকল্প বাতিল করে পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।