- সারাদেশ
- প্রথম স্ত্রী ক্ষুব্ধ হওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা: পিবিআই
প্রথম স্ত্রী ক্ষুব্ধ হওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা: পিবিআই

স্ত্রী নার্গিস আক্তারকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন শাহিন পাহাড়। দ্বিতীয় স্ত্রী রিম্পা খাতুনকে নিয়ে সংসার পাতেন মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মধ্য কামাড়গাঁওয়ে। এরই মধ্যে জন্ম নেয় মেয়েসন্তান। ওদিকে বিষয়টি জেনে ক্ষুব্ধ হন প্রথম স্ত্রী নার্গিস। তাঁর সঙ্গে কলহ শুরু হয় শাহিনের। তখন এক বছর বয়সী মেয়ে আমেনা খাতুনকে নিয়ে রিম্পাকে তাঁর গ্রামের বাড়ি পাবনায় চলে যেতে বলেন। এতে রাজি হননি রিম্পা। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে শ্বাসরোধে রিম্পাকে হত্যা করেন শাহিন। একই কায়দায় হত্যা করেন মেয়ে আমেনাকেও।
এক বছরের বেশি সময় পর মা-মেয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটনের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার সংস্থাটির মুন্সীগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়।
জেলা পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার কদমতলী থানার মুরাদপুর মাদ্রাসা রোডের ভাড়া বাসা থেকে শাহিন পাহাড়কে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টার বর্ণনা দেন।
পিবিআই জানায়, গত বছরের ৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ব্রাহ্মণ পাইকশা গ্রামের একটি জলামগ্ন জমি থেকে লেপ মোড়ানো ও বিছানার প্রিন্টের চাদর বাঁধা অবস্থায় রিম্পা খাতুন ও আমেনার (১) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) আপন কুমার মজুমদার শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। তাঁদের তদন্ত চলার মধ্যেই পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে ওই বছরের ২৫ এপ্রিল মামলাটির দায়িত্ব দেয় পিবিআইকে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার শাহিন পাহাড় শ্রীনগরের বালাশুর গ্রামের তৈয়ব পাহাড়ের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, হত্যার পর দু’জনের মরদেহ লেপ দিয়ে মুড়িয়ে ও বিছানার চাদর দিয়ে বেঁধে বসতঘরে তালা দেন। সেখান থেকে বালাশুরের বাড়িতে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পরে লেপ-তোশক কেনার কথা বলে পূর্বপরিচিত হাসেম মিয়ার মিশুক ভাড়া করেন। রাত ৯টার দিকে ভাড়া বাসার পাশে মিশুক রেখে লেপ দিয়ে মোড়ানো মরদেহ সেখানে তোলেন শাহিন। চালককে বিষয়টি বুঝতে না দিয়ে কোলাপাড়ায় যেতে বলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার ব্রাহ্মণ পাইকশা এলাকায় পৌঁছে মিশুক থামাতে বলেন তিনি। পরে লেপ-চাদরে জড়ানো লাশ দুটি সড়কের পাশের জলামগ্ন জমিতে ফেলে বাড়িতে চলে যান।
পিবিআই সূত্র জানিয়েছে, শাহিনের পাশাপাশি শুরুতে মিশুকচালক হাসেম মিয়াকে আটক করা হয়। পরে এ ঘটনার তাঁর যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। তাঁকে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই শাহিনকে মুন্সীগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন