মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউপির বড়কাঁপন গ্রামের মাঠ থেকে বিলুপ্তপ্রায় ১৩টি শকুনের মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। ধারণা করা হচ্ছে, শিয়ালের উৎপাত থেকে বাঁচতে ছাগলের মাংসে বিষ মিশিয়ে রেখেছিলেন স্থানীয়রা। সেই মাংস খেয়ে শকুন ছাড়াও অনেক কুকুর ও বিড়ালের মৃত্যু হয়েছে। এটিকে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে ঘটনা তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। 

বৃহস্পতিবার ওই গ্রামের ফসলি জমিতে মৃত বেশ কয়েকটি পচে যাওয়া শকুন, শিয়াল, কুকুর ও বিড়াল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ফেনথোয়েট উপাদানযুক্ত সেমকাপ নামের কীটনাশকের খালি বোতল পড়ে থাকতে দেখেছেন স্থানীয়রা। 

তাঁরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় শিয়ালের উৎপাত বেড়ে গিয়েছিল। মাঠে অনেকে গরু-ছাগল চরাতেন। শিয়াল অনেকের ছাগল খেয়েও ফেলেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার কে বা কারা মৃত ছাগলের মাংসে বিষ মিশিয়ে ফেলে রাখে। এ বিষ মিশ্রিত ছাগলের মাংস খেয়ে প্রাণীগুলোর মৃত্যু হয়েছে।  বড়কাঁপন গ্রামের রাজন আহমদ জানান, বিষটোপে শকুন, শিয়াল ও কুকুর মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মৃত শকুনগুলোর একটির পায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানো ছিল। গত দু-তিন দিন ধরে স্যাটেলাইট ট্যাগটির কোনো গতিবিধি পাওয়া যাচ্ছিল না। নেটওয়ার্কিং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন, ওই এলাকায় শকুনটি মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এর পর বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণের বিভাগের লোকজন সেখানে গিয়ে ১৩টি শকুন ছাড়াও আরও কয়েকটি শিয়াল, কুকুর ও বিড়ালের মৃতদেহ দেখতে পান। 

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা রেজাউল করিম চৌধুরী সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয়দের বিষটোপে বিলুপ্ত শকুনসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ শকুনগুলো বাঁচিয়ে রাখতে গরু জবাই করে মাংস খাওয়ানো হয়েছে। যে বা যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। 

তিনি আরও জানান, শকুনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য সিলেট ও ঢাকার ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ১৩টি শকুনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিষয় : শিয়াল ধরতে বিষটোপ শকুনের মৃত্যু বিষটোপে শকুনের মৃত্যু

মন্তব্য করুন