- সারাদেশ
- বাড়িতে বসে কর্মসংস্থান
বাড়িতে বসে কর্মসংস্থান

অন্যদের ফ্রিল্যান্সিংয়ে উদ্বুদ্ধ করতে ক্লাস নেন শামীম
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার উজিল্যাব গ্রামে শামীম আহমেদের বাড়ি। সেখানে বসেই তিনি আয় করেন মাসে প্রায় এক লাখ টাকা। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও দারিদ্র্যকে তিনি পরিশ্রম দিয়ে জয় করেছেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে বাবার অতি কষ্টে জমানো ২৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনা কম্পিউটারের মাধ্যমে শামীমের যাত্রা শুরু।
২০২০ সালে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক্যালের ইলেক্ট্রো মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন শামীম। মা-বাবা আর স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর পরিবার।
শামীম বলেন, ‘চাকরি করলে ৯টা-৫টা অফিস। আয়ও নির্দিষ্ট । ফ্রিল্যান্সিং করলে স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়। বাসায় বসে দেশ ও দেশের বাইরের কোম্পানির কাজ করা সম্ভব। আমি যেখানেই থাকি না কেন সময়মতো কাজটা ডেলিভারি দিতে পারলেই বায়ার খুশি!’
শামীম জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শিখেছেন। ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য তাঁর একমাত্র পথ ছিল ইউটিউব। ২০২০ সালের করোনাকাল শামীমের জন্য সাপে বর হয়েছিল। ক্লাস না থাকায় ফ্রিল্যান্সিংয়ে তিনি বেশি সময় দিতে পেরেছেন।
প্রথমদিকে মাসিক আয় কম ছিল। এখন তা প্রতি মাসে গড়ে আশি হাজার থেকে এক লাখ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকার বেশি আয় করেছিলেন বলে জানান শামীম। গত তিন বছর ধরে শামীম গ্রাফিক্স ডিজাইন ক্যাটাগরি নিয়ে কাজ করছেন। এ পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস ফাইবারে ৬ শতাধিক প্রজেক্ট কমপ্লিট করেছেন। শামীম মূলত কোম্পানির লোগো, ব্যানার ডিজাইন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট, প্রিন্ট ডিজাইনের কাজ করে থাকেন।
শামীম শুধু নিজে ফ্রিল্যান্সিং করেন না। পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দুদিন ক্লাস নেন। সেখানে ৬০ জন শিক্ষার্থী আছে। আবার বাসায় বসেও কাজ শেখান। তাঁর দুই বন্ধু, দুই ছোট বোন কাজ শিখে মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো আয় করেন বলে শামীম জানান। তিনি বলেন, গ্রামে শহরের তুলনায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন অনেক দুর্বল। আমাদের ব্যাংকে পেপল সাপোর্ট করে না। তাই টাকা আয় করে তা হাতে আনাটাও একটা বড় সমস্যা।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের গাজীপুর জেলায় গ্রাফিক্স ডিজাইন ক্যাটাগরিতে ২০২২ সালে অন্যতম সর্বোচ্চ উপার্জনকারীর স্বীকৃতি হিসেবে ল্যাপটপ বিজয়ী হয়েছেন তিনি। শামীম একটি নিজস্ব এজেন্সি তৈরি করতে চান, যেখানে হাজারো তরুণের কর্মসংস্থান হবে। এমনটাই স্বপ্ন শামীম আহমেদের।
মন্তব্য করুন