- সারাদেশ
- ফরিদপুরে শিশুকে দত্তক নিতে ধর্ষণের নাটক সাজান শিক্ষিকা
ফরিদপুরে শিশুকে দত্তক নিতে ধর্ষণের নাটক সাজান শিক্ষিকা

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান - সমকাল
ফরিদপুরের মধুখালীতে দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে তার সৎ বাবা ও ভাইকে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে আটকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনাটি নতুন মোড় নিয়েছে। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা। স্কুলের এক শিক্ষিকা শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য এ নাটক সাজিয়েছেন।
বাবা ও ছেলেকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোমবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, মধুখালীর আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিঃসন্তান সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান লিপি তাঁর স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া ওই শিশুকে দত্তক নিতে তার সৎ বাবাকে চাপ দিতে থাকেন। তিনি দত্তক দিতে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষকের আত্মসম্মানে লাগে। গত ১৭ মার্চ শিশুটিকে ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে ওই বিদ্যালয়ের কক্ষে শিশুর বাবা ও সৎ ভাইয়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পরে মধুখালী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গত শনিবার তাদের নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে বোঝা যায়, ঘটনাটি আসলে ধর্ষণ সংক্রান্ত নয়।
পুলিশ সুপার জানান, ওই শিক্ষিকা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ করতে বাধ্য করে ও তার একটি ভিডিও তৈরি করে। পরে আদালতে শিশুটি জানায়, তাকে কোনো প্রকার যৌন হয়রানি করা হয়নি।
এর আগে শিশুটির ১৫ বছর বয়সী সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে চাপে পড়ে তার সৎ বাবাই ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। আদালতে মেয়েটির জবানবন্দির পর সেই মামলাটির আর কোনো ভিত্তি নেই। এজন্য আদালতে শিশুটির সৎ ভাইকে নিরপরাধ উল্লেখ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিলে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ, যাতে অতি দ্রুত ওই কিশোর ছাড়া পায়। সে এখন কিশোর সংশোধনাগারে আছে।
পুলিশ জানায়, স্কুলে মাতৃহীন মেয়েটির সঙ্গে নিঃসন্তান সহকারী শিক্ষক ইসরাতের সখ্য তৈরি হয়। শিশুটি তার বাড়িতে যাতায়াত করতে থাকে। শিক্ষক তাকে মনে মনে দত্তক নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। সেদিন শিশুটির বাবা ও সৎ ভাই এ বিষয়ে কথা বলার জন্যই উপস্থিত হয়েছিলেন।
এসপি বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে শিশুটির বাবা ও ছেলেকে একজন মহিলা ও কয়েকজন যুবক অমানবিক প্রহার করছে। তারা বাবা ও ছেলেকে লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। তিনি বলেন, এ মামলায় ভিডিও পর্যালোচনা করে প্রথমে স্থানীয় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। শিক্ষকের বিষয়ে তারা আরও প্রমাণাদি সংগ্রহ করছেন। তাঁকেও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
মন্তব্য করুন