- সারাদেশ
- সাততলা বস্তিতে আগুনে এবার পুড়ল ১৫০ ঘর
সাততলা বস্তিতে আগুনে এবার পুড়ল ১৫০ ঘর
খোলা আকাশের নিচে কয়েকশ মানুষ

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তি আবারও আগুনে পুড়েছে। এবারের আগুনে ছাই হয়েছে ১৫০ ঘর। সোমবার সকালে আগুনের সূত্রপাত। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কেউ হতাহত হননি। তবে অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকশ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বস্তির বাসিন্দারা বলছেন, গত ১০ বছরে এই বস্তিতে ছয়বার আগুন লেগেছে। এভাবে আগুন লাগার ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলা যায় না। তাঁদের দাবি, বস্তি উচ্ছেদ করতে নানারকম ষড়যন্ত্র চলছে। এর আগে উচ্ছেদ না করার দাবিতে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মহাখালীতে সড়ক অবরোধ করেছিলেন তাঁরা।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন সমকালকে বলেন, সোমবার সকাল ৬টা ৪৮ মিনিটে সাততলা বস্তিতে আগুন লাগার খবর আসে। এর ১০ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট সেখানে পৌঁছায়। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় ইউনিটও বাড়ানো হয়। সকাল ৮টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভানো হয় সকাল সাড়ে ৯টায়।
তিনি জানান, আগুনে বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি বস্তির কাঁচা ঘর এবং সেগুলোর ভেতরে থাকা মালপত্র পুড়ে গেছে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তদন্তের পর জানা যাবে।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, রান্নার চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। ঘর তৈরির উপাদান ও ভেতরের জিনিসপত্র দাহ্যবস্তু হওয়ায় আগুন দ্রুত আশপাশের ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
বস্তির বাসিন্দারা জানান, রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহকর্মীসহ মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ এই বস্তিতে থাকেন। সোমবার সকালে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ ‘আগুন আগুন’ চিৎকার কানে আসে। ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁরা আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান। তখন তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যান। কেউ ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেননি। পরনের কাপড় ছাড়া তাঁদের আর কিছুই নেই।
বস্তির বাসিন্দা বাশার খান বলেন, বেশিরভাগ ঘরে দামি জিনিসপত্র তেমন কিছু ছিল না। তবে কেউ কেউ টিভি-ফ্রিজ ব্যবহার করতেন। অনেকের সঞ্চিত টাকা ঘরে রাখা ছিল। তাঁরা সবাই এখন নিঃস্ব। তাঁদের পক্ষে অনেক ভাড়া দিয়ে অন্য কোথাও থাকা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে বস্তিতে থাকেন। কিন্তু বারবার কেন এখানে আগুন লাগে?
ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইনের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে মেয়র সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন। তিনি দ্রুত অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করে প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের নির্দেশও দিয়েছেন মেয়র।
মন্তব্য করুন