- সারাদেশ
- সুলতানা জেসমিনের হাতের কনুই ও কপালের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন
ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধানের বক্তব্য
সুলতানা জেসমিনের হাতের কনুই ও কপালের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন
র্যাব হেফাজতে মৃত্যু

সুলতানা জেসমিন
নওগাঁয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হেফাজতে মারা যাওয়া সুলতানা জেসমিনের (৪৫) ডান হাতের কনুই- এর উল্টা পাশে কালশিরার আঘাত রয়েছে। এছাড়া কপালের বাম পাশে ঘষা লাগার মতো আঘাতের চিহৃ দেখা গেছে। র্যাব আটকের পর নারীর মৃত্যু: পোস্টমর্টেম রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত ৩ সদস্যের বোর্ডের প্রধান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক কফিল উদ্দিন সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত মেডিকেল সনদসহ প্রাসঙ্গিক নথি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই নথি আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় হাইকোর্টে জমা দেওয়ার কথা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের উপর আজ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। মামলার আগে আটক নিয়ে নানা প্রশ্ন
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে কী উল্লেখ করা হয়েছে তা জানি না। আমরা দুপুর ২টায় হাইকোর্টে প্রাসঙ্গিক নথি জমা দেব।
আগের দিন সোমবার সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই নারী র্যাবের কোন কর্মকর্তার অধীনে ছিলেন তাদের নামের তালিকাও আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দেওয়া হয়। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপক্ষ কোনো মামলা না করায় গতকাল সোমবার গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বেঞ্চ।
গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগা শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। এরপর ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। সুলতানা জেসমিন সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী পদে চাকরি করতেন।
তার মৃত্যুর বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সোমবার ওই প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। পরে হাইকোর্ট প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন এবং সংশ্লিষ্ট র্যাব কর্মকর্তাদের তালিকা দাখিলের বিষয়ে আদেশ দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুলতানা জেসমিন শহরের জনকল্যাণ মহল্লায় ভাড়া থাকতেন। ২২ মার্চ সকালে প্রতিদিনের মতো অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হন সুলতানা জেসমিন। পথে সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে পৌঁছালে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। প্রায় ২ ঘণ্টা পর তাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র্যাব। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে মারা যান সুলতানা জেসমিন।
মন্তব্য করুন