সারাদিন সংযমের পর ইফতারিতে পছন্দের অনেক কিছুই রাখতে চান রোজাদাররা। এ ক্ষেত্রে খুলনার মানুষের অন্যতম পছন্দ ভিন্ন স্বাদের নানা হালিম ও মচমচে রেশমি জিলাপি। নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে বহু বছর ধরে বিক্রি হচ্ছে এ নানা হালিম। সময়ের পরিক্রমায় কমেনি এর চাহিদা, বরং বেড়েছে। আর নগরীর ফেরিঘাট মোড়ের দুটি ও বড়বাজারের একটি দোকানে বিক্রি হয় রেশমি জিলাপি। সাধারণ জিলাপির চেয়ে এটি সরু ও আকারে ছোট। তবে স্বাদে অতুলনীয়।
নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের পাশে ফুটপাতের ওপর শামিয়ানা টানিয়ে স্পেশাল নানা হালিম বিক্রি করা হচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে এখানে রমজান মাসজুড়ে হালিম বিক্রি করেন বাবুর্চি হজরত আলী। হালিম বিক্রি করেই তিনি ‘নানা’ নামে পরিচিত হন। তাঁর হালিমের নাম হয় ‘নানা হালিম’। বিকেল ৪টার দিকে সেখানে ক্রেতার ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। প্লাস্টিকের বাটি ও মাটির পাত্রে বিক্রি করা হচ্ছে হালিম। কেউ কেউ বাসা থেকে পাত্র নিয়ে এসেছেন। কর্মচারীরা ডেকচি থেকে পাত্রে হালিম তুলে দিচ্ছেন।
হজরত আলী জানান, ৩০ বছর ধরে তিনি রমজানে হালিম বিক্রি করেন। খাসির মাংস, পোলাও চাল, মুগ ডাল, গমের গুঁড়া, তেল, লবণ, নিজস্ব মসলা ও ঘি দিয়ে তৈরি করা হয় এ হালিম। প্রতিদিন ১২০ কেজি হালিম রান্না করেন। ইফতারির আগেই সব হালিম বিক্রি হয়ে যায়। হালিম রান্না ও বিক্রির কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন ১০ জন কর্মচারী।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে মানুষ হালিম কিনে নেন। পাত্রের আকার অনুযায়ী হালিম বিক্রি করা হয় ১৫০, ৩০০, ৫০০, ৮০০ ও ১ হাজার টাকায়। প্রতিদিন বিক্রি হয় প্রায় ৮০ হাজার টাকার হালিম।
নগরীর বাগমারা থেকে হালিম কিনতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, খুলনায় ইফতারিতে নানা হালিম একটা ঐতিহ্য। বাসার সবাই হালিম পছন্দ করে। এ জন্য তিনি এসেছেন।
রেশমি জিলাপি: আকারে ছোট, গড়নে চিকন, চিনির শিরা কম, আর মচমচে। নাম রেশমি জিলাপি। নগরীর ফেরিঘাট মোড়ে সাত-আট বছর ধরে রোজায় তৈরি করা হচ্ছে মুখরোচক রেশমি জিলাপি। এ জিলাপি কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ক্রেতারা। সাধারণ জিলাপির চেয়ে দাম বেশি হলেও ক্রেতারা এটি পছন্দ করেন।
সেলিম সুইটসের মালিক মো. বুলু বলেন, রমজান এলে তারা রেশমি জিলাপি তৈরি করেন। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কেজি জিলাপি বানানো হয় তাঁর দোকানে।
দোকানের বিক্রেতা মো. মান্না বলেন, রেশমি জিলাপি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা।