- সারাদেশ
- সুনামগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ
সুনামগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ

সুনামগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট করে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মো. জাকির হোসেন এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. রাসেল মিয়া (২৫) সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের রেছনা বেগমের মেয়ে মহনমালা বেগম ও মো. রাসেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর মো. রাসেল মিয়া যৌতুক দাবিতে প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে মহনমালা বেগম জামালগঞ্জ আমল গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর ৮৬/১৭নং মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আসামি মো. রাসেল মিয়া আর যৌতুক দাবি ও নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করেন রাসেল। এরপর ২০১৮ সালের ২৯ জুন মহনমালাকে ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় ভিকটিমের গলায় ও ঠোঁটে জখমের চিহ্ন, নাক দিয়ে রক্ত ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। খবর পেয়ে মহনমালা বেগমের মা রেছনা বেগমসহ আত্মীয় স্বজন রাসেল মিয়ার বাড়িতে গেলে তারা পালিয়ে যান। পরে মহনমালার মা রেছনা বেগম ২০১৮ সালের ৮ জুলাই বাদী হয়ে জামালগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আসামি মো. রাসেল মিয়া ১৬ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
দীর্ঘ শুনানির সময় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত বৃহস্পতিবার মো. রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায় এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নাসিরুল হক আফিন্দি।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এক শিশুকে ধর্ষণের পৃথক আরেকটি মামলায় আসামি খলিল আহমেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মো. জাকির হোসেন। রায়ে আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানারও আদেশ দেয়া হয়। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন। দণ্ডপ্রাপ্ত খলিল আহমেদ উপজেলার ডলুরা গ্রামের ছমছু মিয়ার ছেলে।
অপরদিকে আকেটি ধর্ষণ মামলায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে আব্দুল রহমান (আব্দুল) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানারও আদেশ দেয়া হয়। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায়।
মন্তব্য করুন