লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে তরমুজ চুরির অভিযোগ এনে শিকলে বেঁধে ৯ বছরের এক শিশুকে নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে তার বোনকেও মারধর করা হয়। গতকাল বুধবার উপজেলার চরলরেন্স এলাকায় এ ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার বোন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

গত সোমবার রাতে স্থানীয় মো. রিপনের ক্ষেত থেকে ছয়টি তরমুজ চুরি হয়। রিপনেরই ভাগ্নে হৃদয়ের নেতৃত্বে তিন শিশু তরমুজগুলো চুরি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে রিপন স্থানীয়দের কাছে বিচার চান। এ নিয়ে বুধবার বিকেলে ওই সালিশ বসার কথা ছিল।

সালিশে তরমুজ চুরির পরিকল্পনাকারী হিসেবে ছেলের নাম না বলতে হৃদয়ের মা কুলসুম বেগম শিশুটিকে চাপ দেন বলে জানা যায়। তবে এতে রাজি না হওয়ায় দুপুরে শিশুটিকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে শিকলে বেঁধে হৃদয়সহ তার মা কুলসুম ও বাবা আব্দুল মান্নান মারধর করেন।

নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা বলেন, দুপুরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর প্রতিবেশী এক নারীর মাধ্যমে জানতে পারেন তাঁর ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে তাঁর বড় মেয়ে ছাড়িয়ে আনতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। লাঠির আঘাতে মেয়ের সারা শরীর ফুলে গেছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই অসহায়। কয়েক বছর আগে মেঘনার ভাঙনের শিকার হয়ে এই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছি। আমরা গরিব ও অসহায় বলেই ছেলেকে এভাবে মারধর করেছে। এ ঘটনার বিচার চাই।’

এদিকে পুলিশ বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে গেলে হৃদয় ও তাঁর বাবা মান্নান গা-ঢাকা দেন। হৃদয়ের মা কুলসুম শিশুটিকে শিকলে বেঁধে রাখার কথা স্বীকার করলেও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

কমলনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে অভিযুক্তদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের থানায় আসতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।