- সারাদেশ
- আলু সংরক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
আলু সংরক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

প্রতীকী ছবি
চাঁদপুরে বেশির ভাগ আলু উঠে গেছে। এবার ফলন ভালো হয়েছে। সব আলু উঠে গেলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ। তবে সমস্যা আলু সংরক্ষণে রাখা নিয়ে। এ জেলায় বীজ সংরক্ষণাগার মাত্র একটি। হিমাগার রয়েছে ১৪টি। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল মনে করছেন আলু চাষিরা।
চাঁদপুরের ‘মেঘনা ধনাগোদা’ ও ‘চাঁদপুর সেচ প্রকল্প’র অভ্যন্তরসহ নদী উপকূলীয় এলাকায় আলুর চাষ বেশি হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ইতোমধ্যে ৯৯ শতাংশ ক্ষেতের আলু তোলা হয়েছে বলে জানান এক কৃষি কর্মকর্তা। বাকি আছে অল্প কিছু। ওই কর্মকর্তার দাবি, গত বছর চাঁদপুরে হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ছিল ১৯ টন। এবার ২৪ টন। লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন, বালিয়া, চান্দ্রা, বাগাদী, মৈশাদী, কল্যাণপুর, আশিকাটি, শাহমাহমুদপুর, রামপুর, কৃষ্ণপুর, কুমারডুগী ও ঘোষেরহাট এলাকার বড় বড় মাঠে আলু চাষ আবাদ হয়েছে। এসব এলাকায় আলু তুলতে ব্যস্ত চাষিরা। সদর উপজেলা ছাড়াও কচুয়া, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, হাইমচরে আলুর ভালো ফলন হয়েছে। এই অঞ্চলে বেশি চাষ হয়েছে দুই জাতের আলু। একটি ডায়মন্ড ও আরেকটি কার্ডিনাল।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। এর মধ্যে চাঁদপুর সদরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর, যা অর্জিত হয়েছে। মতলব উত্তরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬৮০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৭৬৫ হেক্টর। মতলব দক্ষিণের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৩৮০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ১০০ হেক্টর। হাজীগঞ্জের লক্ষ্যমাত্রা ৪৬০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৫৮৫ হেক্টর। শাহরাস্তিতে লক্ষ্যমাত্রা ৭০ হেক্টর, যা অর্জিত হয়েছে। কচুয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার হেক্টর, যা অর্জিত হয়েছে। ফরিদগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ১১০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১২০ হেক্টর। হাইমচরে লক্ষ্যমাত্রা ১০০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১৬০ হেক্টর। তবে কিছু উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আলু উৎপাদন হলেও গড় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক।
কথা হয় সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কৃষক বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি তিন একর জমিতে আলু চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে সঠিক সময়ে আলু তুলে ফেলছি।’
তবে এখান পর্যাপ্ত হিমাগার না থাকায় সমস্যায় রয়েছেন আলু চাষিরা। মাত্র ১৪টি হিমাগার। একটিমাত্র বীজ সংরক্ষণাগার। বিএডিসির এই একটি মাত্র হিমাগারে ১ হাজার ২০০ টন আলু বীজ রাখা যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড. সাফায়াত বলেন, এখানে বীজ আলু রাখার জন্য একাধিক বীজাগার জরুরি। বীজাগার এবং হিমাগার সংকটের কারণে এখানে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ালেও প্রতি বছর আমদানি করতে হয়।
কথা হয় আলু চাষি রফিক মিয়া ও গোলাম রসুলের সঙ্গে। তাঁদের ভাষ্য, যে পরিমাণ অর্থ ও শ্রম খরচ করেন আলু ক্ষেতে, তাতে সে রকম লাভ হয় না তাঁদের। হিমাগারে আলু রাখাও মুশকিল হয়ে যায়। সেখানে টাকাও নেয় বেশি। এ কারণে আলু অনেক দিন সংরক্ষণে না রাখতে পেরে সস্তায় বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
মন্তব্য করুন