- সারাদেশ
- শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজ-কদমের ক্ষতি
সালথায় ঋণগ্রস্ত চাষিরা দুশ্চিন্তায়
শিলাবৃষ্টিতে পেঁয়াজ-কদমের ক্ষতি

বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া পেঁয়াজ তুলছেন চাষিরা। বৃহস্পতিবার সালথার আটঘর ইউনিয়নের কুষ্টিয়া মাঠে-সমকাল
সালথায় শিলাবৃষ্টিতে উত্তোলনের অপেক্ষায় থাকা হালি পেঁয়াজ ও কদমের ক্ষতি হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টিতে এ ক্ষতি হয়। পেঁয়াজ-কদমের ফুল ঝরে যাওয়ায় বীজ সংকট দেখা দিতে পারে।
কৃষকরা বলছেন, পেঁয়াজ ও কদমের ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ঋণগ্রস্ত অনেক কৃষক। দাম না পেয়ে গত বছরও লোকসান গুনতে হয়েছিল তাঁদের। তারপরও এবার বিপুল পরিমাণ জমিতে হালি পেঁয়াজ চাষ করেন তাঁরা। সে পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হয়েছে। কয়েকদিন পর বীজ তোলা শুরু হবে।
জানা গেছে, পেঁয়াজ চাষ করে সারা বছরের খরচ মেটায় সালথার বেশিরভাগ পরিবার। এবার উপজেলায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার পেঁয়াজের আশানুরূপ ফলন হয়নি। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেছে। সারা বছর বাজারে পেঁয়াজের দামও কম ছিল। সব মিলিয়ে এবার লোকসানের শঙ্কায় দিন গুনছেন তাঁরা।
বিভাগদী গ্রামের কৃষক মো. কুদ্দুস মাতুব্বর পাঁচ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে সাড়ে তিন বিঘা জমির পেঁয়াজ তলিয়ে গেছে। এসব পেঁয়াজ মজুদ রাখা সম্ভব না। ঘরে রাখলে সব পচে যাবে।
কৃষক আলতাব শেখ বলেন, গত বছর লোকসান হলেও এবার তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। দু’একদিনের মধ্যে পেঁয়াজ তুলতে চেয়েছিলেন। এর আগেই ক্ষতি হয়ে গেল। সাইফুল ইসলাম ফারুক জানান, তাঁর দুই বিঘা জমির পেঁয়াজ তলিয়ে গেছে। রোদে ক্ষেত শুকানোর পর উত্তোলন করলে পচে যাবে। বাধ্য হয়েই তুলছেন। এবার ন্যায্য দাম না পেলে ঘরে বসে থাকতে হবে। ১৩ শতাংশ জমির পেঁয়াজ-কদমও মাটিতে মিশে গেছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কুষ্টিয়ার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ নিচু জমির পেঁয়াজ তলিয়ে গেছে। উচু জমির পেঁয়াজ শিলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাঁরা পেঁয়াজ ক্ষেতের ভেতরে আগাম পাটের বীজ বপন করেছেন, তাঁদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। অনেক কৃষককে ক্ষেতের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ শ্রমিক নিয়ে কাদাপানিতে নেমে পেঁয়াজ তুলছিলেন।
বোয়ালিয়া গ্রামের চাষি মোহাম্মদ মিঠু মোল্লা বলেন, আমরাতো আর চাকরিজীবী না যে মাস শেষে বেতন পাব। সব কিছুর দামই বাড়তি, শুধু কৃষকের পেঁয়াজের দাম নেই। কামরুল হাসান বলেন, এলাকার অনেকেই ঋণ নিয়েছেন পেঁয়াজ উঠিয়ে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন, এ ভরসায়। হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে সবাই হতাশার মধ্যে আছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংশু দাস বলেন, শিলাবৃষ্টিতে নিচু এলাকার পেঁয়াজের জমিতে হালকা পানি জমেছে। যেগুলো তোলার সময় হয়নি, সেগুলোও তুলতে হচ্ছে। তবে সমতল জমির পেঁয়াজ ভালো আছে। আবহাওয়া এমন থাকলে বা আর বৃষ্টি না হলে তলিয়ে যাওয়া পেঁয়াজের বেশি ক্ষতি হবে না।
মন্তব্য করুন