হবিগঞ্জের হাওর অঞ্চলগুলোতে ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটা দেখা দিয়েছে। আগাম জাতের ধানে এমন চিটা দেখা দেওয়ায় হাওর অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কয়েকদিন পর সোনালি ফসল ঘরে তুলবে এই আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে থাকা কৃষকের চোখেমুখে এখন হতাশার ছাপ বিরাজ করছে। যদিও স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর বলছে, আবহাওয়াজনিত কারণে এমনটা হচ্ছে। তবে জেলায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, জেলার লাখাই, বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ভাটি অঞ্চলগুলোর হাওরে বেশিরভাগ ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটা দেখা দিয়েছে। ধানের ফুল বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারাগুলো মরে যাচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততোই খারাপ হচ্ছে। কৃষকদের স্বপ্নের ফসলই এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

আলাপকালে কৃষকরা জানান, ভাটি এলাকার কৃষকরা সব সময়ই অকাল বন্যার আতঙ্কে থাকেন। এ কারণে সাধারণত আগাম জাতের ধানের দিকে ঝোঁকেন এখানকার প্রান্তিক চাষিরা। এক্ষেত্রে তাদের সামনে কয়েকটি দেশীয় জাতের ধান রয়েছে। কিন্তু এসব জাতের ধানের ফলন তুলনামূলক কম হয়। এ কারণে কৃষকেরা উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করে থাকেন। কিন্তু উচ্চফলনশীল জাতের বেশিরভাগ ধানই দেরিতে ঘরে ওঠে। তবে তুলনামূলকভাবে আগে ফলন নিশ্চিত হয় ব্রি-২৮ ধানের। উচ্চফলনশীল জাতগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয়। গত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা এই জাতের ধান চাষে বেশ লাভবানও হচ্ছেন। সে আশাতেই এবারও ব্রি-২৮ চাষ করেছিলেন তারা।

কৃষক রমজান আলী জানান, খাওয়ার জন্য তিন কিয়ার জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান রোপণ করেছিলেন তিনি। গত কয়েকদিনে জমির সব ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। ফুল বের হওয়ার পরেই সেগুলো ঝরে যাচ্ছে। একই আক্ষেপের কথা জানালেন কৃষক আব্দুর রহমানসহ আরও অনেকেই।

তাদেরই একজনের ভাষ্য, তিন কিয়ার ৭৫ শতাংশ জমিতে এবার ব্রি-২৮ ধান চাষ করেছিলেন।। আশানুরূপ ফলন হলে ৫০/৬০ মণ ধান পাওয়ার কথা কিন্তু চিটা হওয়ায় এক মণও টিকবে না।

তবে পুরো জেলায় কী পরিমাণ ব্রি-২৮ জাতের ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই তথ্য নেই জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে। জেলা সম্প্রসারণ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, আবহাওয়ার তারতম্যের কারণেই ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটা হয়েছে। তবে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে তারা জেলার বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করেছেন। তবে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে।