সুনামগঞ্জ জেলার হাটবাজারগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারভেদে ইচ্ছে মতো ব্রয়লার জাতের মুরগির দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। জেলার কোথাও ২০০ টাকা, আবার কোনো কোনো হাট-বাজারে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে সেগুলো।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পরিবহন খরচ, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আনার পর ওজন কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তাদের বেশি দামে বিক্রয় করতে হচ্ছে। তবে বিষয়টি আমলে নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা সুনামগঞ্জ শহরের জেল রোডের মোরগ বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ২০০ টাকার ওপরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি না করার কথা জানান তারা।

বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের মোরগবাজার, শান্তিগঞ্জের পাগলা ও শান্তিগঞ্জ মোরগ বাজার ও দোয়ারাবাজার সদরের মোরগ বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দামের ভিন্নতা আছে মোরগের দোকানগুলোতে। সুনামগঞ্জের মোরগ বাজারে বেলা ১১টায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান শুরু হয়। এর আগে সকালে বাজারে মোরগ বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা কেজিতে। অভিযানকালে দাম কমে ২২০-এ নামে।

দোয়ারাবাজারের মুরগি ব্যবসায়ীরা একেক দোকানে একেক দামে মুরগি বিক্রি করছেন। মুরগি বাজারের দোকানি মিলনের দোকানে যে মুরগি ২৩০ টাকা কেজি সেটাই আবার পাশের রুমেল ও আমিরের দোকানে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। একই সময়ে শান্তিগঞ্জের পাগলাবাজার ও সদরের মোরগের দোকানগুলোয় ২০০-২৪০ টাকা দরে কেজি বিক্রয় হয়েছে ব্রয়লার মোরগ।

শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান সুমন জানান, জাতীয়ভাবে যখন ১৫৩ টাকা ব্রয়লারের পাইকারি দাম ছিল, তখনও সুনামগঞ্জের বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা বিক্রয় হয়েছে ব্রয়লার মোরগের কেজি। নিম্ন আয়ের মানুষেরাই ব্রয়লার মোরগ কিনে মাংসের স্বাদ নেন। এই বাজারের মনিটরিং জোরদার করা জরুরি।

সুনামগঞ্জ শহরের মোরগ বাজারে ভোক্তা অধিকারের অভিযানের সময় ২২০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মোরগ বিক্রির কথা জানতে পেরে সাইফুর রহমানের দোকানে খোঁজ নেন। এই ব্যবসায়ী জানান ১৮০ টাকা কেজি দরে মোরগ কিনে সব ব্যয় হিসাব করে কেজি ২২০ টাকা বিক্রয় করতে হচ্ছে। এ সময় অভিযানকারী দল মোরগ কেনার ভাউচার দেখতে চাইলে দোকানি তা দেখাতে না পারায় তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সুনামগঞ্জ ব্রয়লার মোরগ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দাম নিয়ন্ত্রণ করছেন করপোরেট ব্যবসায়ীরা। ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ায়-কমায়। সকালে কাজী ফার্মস গ্রুপ থেকে এসএমএস করে জানানো হয়েছে ১৮০ টাকা, আবার দুপুরে জানিয়েছে ১৭৬ টাকা কেজি বিক্রয় হচ্ছে ব্রয়লার। আমরা ১০০০ মোরগ কিনে আনলে ১০০ মারা যায়। পোলট্রি ফিডেরও দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় খুচরা ব্যবসায়ীদেরই ভোগান্তি চরমে। কারণ করপোরেট পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের তো জবাবদিহিতা নেই।’

সুনামগঞ্জ ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলমিন জেলা শহরের মোরগ বাজারে অভিযান চালানোর সময় সাংবাদিকদের বলেন, পাইকারি ও খুচরা বাজারে সমন্বয় থাকতে হবে। ব্রয়লার মোরগ কোনোভাবেই এই সময়ে ২০০ টাকা কেজির বেশি বিক্রি করা যাবে না।