- সারাদেশ
- যশোরে পৃথক ঘটনায় ছুরিকাঘাতে নিহত ২
যশোরে পৃথক ঘটনায় ছুরিকাঘাতে নিহত ২
-samakal-64279bb6768c2.jpg)
ছবি: সমকাল
যশোরে পৃথক ঘটনায় ছুরিকাঘাতে দুই তরুণ খুন হয়েছে। শুক্রবার রাতে যশোর শহরের বারান্দি নাথপাড়া ও সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামে হত্যাকান্ড দুটি সংঘটিত হয়। এদের মধ্যে বারান্দি নাথপাড়ায় নাহিদ হাসান (১৫) খুন হয়েছে প্রতিপক্ষের হামলায়। ঘুরুলিয়ায় ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ইউনুস (২২) নামের এক যুবক।
নিহত ইউনুস ঘুরুলিয়া সাদ্দামের মোড়ের আব্দুল লতিফের ছেলে আর নাহিদ শহরতলীর শেখহাটি তরফ নওয়াপাড়ার মোহাম্মদ বাচ্চু মোল্লার ছেলে। নিহতদের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) বেলাল হোসেন জানান, দুটি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে আটকের জন্যে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
নাহিদের বড় ভাই বোরহান জানান, তারা দুইভাই শহরের আরএন রোডে মোটরপার্টসের দোকানে ব্যবসা করতেন। নাহিদ শুক্রবার রাতে পূর্বপরিচিত হাসানকে (১৫) নিয়ে বারান্দি নাথপাড়ায় বসে ছিল। এ সময় সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে বিবাদের জেরে একদল কিশোর নাহিদকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় ছুরিকাঘাতে হাসানও আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত হাসানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মহিলা আওয়ামী লীগের এক নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদিকা শ্যামলী খাতুন বলেন, ‘তারাবি নামাজের সময়ে হঠাৎ চিৎকার চেচামেচি শুনি। এরপর দেখি কিছু ছেলে দৌঁড়ে চলে যাচ্ছে। পরে শুনি বারান্দি পাড়ার জসিমের ছেলে অন্তরসহ চার থেকে পাঁচজন নাহিদকে গলায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। নাহিদকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব বেড়েছে। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।’
এদিকে নাহিদের এমন মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে এলাকার পরিবেশ। আহাজারি করতে করতে নাহিদের বাবা বাচ্চু মোল্লা বলেন, ‘আমি তো জীবনে অপরাধ করিনি। তাহলে আমার ছেলের এমন জীবন দিতে হলো কেন। আমার ছেলের কোনো অপরাধ ছিলো না।’
অপরদিকে যশোর সদরের ঘুরুলিয়া গ্রামে ছোট ভাই ইউসুফের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন ইউনুস। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউসুফের সাথে বড় ভাবী সুরাইয়ার ঝগড়া বিবাদ হয়। এই ঝগড়ার এক পর্যায়ে ইউসুফ বড় ভাই ইউনুসের বুকে ছুরিকাঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় স্বজনরা ইউনুসকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ইউনুসের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, হামলাকারী ইউসুফ মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে এলাকায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সে বড় ভাবী সুরাইয়াকেও উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এর জের ধরে ঝগড়া বিবাদ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
যশোর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রূপন কুমার সরকার জানান, পুলিশ ঘটনা অনুসন্ধান ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে। একইসাথে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন