কুমিল্লা দেবিদ্বার পৌর এলাকায় সালিশ বৈঠকে অভিযুক্ত তিনজনকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করে ধর্ষণের শিকার তরুণীর ‘আত্মহত্যার’ ঘটনা ধামাচাপার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার প্রতিবেশির বাড়ি থেকে ফেরার পথে পিংকি আক্তারকে (২২) তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে তার সহকর্মী বিনাইপাড় গ্রামের মো. হাসান, জসীম উদ্দীন ও রুবেল মিয়া। তারা স্থানীয় শাহজাহান ফিশিং নেট ইন্ডাস্ট্রিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত।

ঘটনার পর দিন পিংকির পরিবার অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করার কথা বললে হাসান পিংকিকে বিয়েতে রাজি হয়। তবে পিংকি অপমানে ওই দিন সন্ধ্যায় কীটনাশক পান করেন। স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালীদের চাপের মুখে থানা কিংবা আদালতের আশ্রয় নিতে পারছে না পিংকির পরিবার। স্থানীয় প্রভাবশালীরা ধর্ষকদের বাঁচাতে মামলার আগেই সালিশ ডেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ধর্ষকদের পিংকির পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দিতে বলে। এ সময় ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

সালিশে দেবিদ্বার ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও তাঁর বড় ভাই ‘শাহজাহান ফিশিং নেট ইন্ডাস্ট্রির’ মালিক শাহজাহান মেম্বারসহ প্রভাবশালীরা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত হাসান শাহজাহান মেম্বার ও আবু তাহেরের ভাগনে। তাকে রক্ষা করতে পিংকির পরিবারকে পুলিশের আশ্রয় নিতে দেননি তাঁরা।

এ বিষয়ে আবু তাহের বলেন, ‘ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে হাসান, জসীম ও রুবেল। পিংকিকে বিয়ে করবে বলে হাসান জানায়। কিন্তু পিংকি বিষপানে আত্মহত্যা করে। আমরা পিংকির পরিবারকে মামলা করার কথা বলেছিলাম। তারা সমাধানের কথা বললে সালিশ ডেকে তিনজনকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।’ তবে সালিশে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে শাহজাহান মেম্বার বলেন, ‘আমি ঘটনার বিষয় অবগত হলেও সালিশে ছিলাম না। হাসান, জসীম, রুবেল আমার কারখানায় চাকরি করলেও ঘটনার পর থেকে আসে না।’

দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর জানান, দলবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। স্থানীয়রা ময়নাতদন্ত ছাড়া পিংকির লাশ দাফন করতে গেলে, সন্দেহ হওয়ায় ময়নাতদন্ত করা হয়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তরুণীর পরিবার চাইলে মামলা নেওয়া হবে।