- সারাদেশ
- মাগুরার মহম্মদপুরে মাটি খুঁড়ে পাওয়া মানবকঙ্কাল রাজাকারদের বলে দাবি
মাগুরার মহম্মদপুরে মাটি খুঁড়ে পাওয়া মানবকঙ্কাল রাজাকারদের বলে দাবি

ছবি: সমকাল
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে মাটি খোঁড়ার সময় মানবকঙ্কালের যে অংশবিশেষ উদ্ধার হয়েছে, তা একাত্তরে নিহত রাজাকারদের বলে দাবি করেছেন স্থানীয় কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। কঙ্কাল উদ্ধারের খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ উপজেলা পরিষদে এলে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে এই তথ্য জানান। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, একাত্তরের ১৯ নভেম্বর মহম্মদপুর সদরে যুদ্ধে পাকিস্তানিদের এ দেশীয় দোসর ও রাজাকার যারা মারা গেছে, উদ্ধারকৃত কঙ্কালগুলো তাদেরই হয়ে থাকবে। সে সময় ২১ জন মতান্তরে ২৩ জন রাজাকারকে হত্যার পর বর্তমান উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় পুঁতে দেওয়া হয়।
গত ৪ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের পুরোনো হলরুমের পূর্বপাশে স্থানীয় কৃষি বিভাগের স্টোররুম নির্মাণের জন্য শ্রমিকরা মাটি খোঁড়ার সময় দুটি মানবকঙ্কালের বিভিন্ন অংশ উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি মিডিয়ায় ভিন্নরকম খবর প্রকাশ হওয়ায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। স্টোররুম নির্মাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিষয়টি সরেজমিন খতিয়ে দেখতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ উপজেলা পরিষদে আসেন। তিনি স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হোসেন, আব্দুল হাই মিয়াসহ কয়েকজন একাত্তরের সেই ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় মহম্মদপুরের ইউএনও রামানন্দ পাল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো, উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসিত কুমার রায়, কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুল ইসলামসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তৎকালীন টিটিডিসি ভবনে (বর্তমান উপজেলা পরিষদ) রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। ১৯ নভেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। সে যুদ্ধে মহম্মদপুর উপজেলার নাগড়ীপাড়া গ্রামের যুবক আহম্মদ ও তাঁর ভাই মহম্মদ শহীদ হন। এ যুদ্ধে আরও শহীদ হন যশোর সদর উপজেলাধীন সতিঘাটার কামালপুর গ্রামের ইপিআর সদস্য মহম্মদ উল্লাহ। পরে মহম্মদ উল্লাহ বীরবিক্রম উপাধিতে ভূষিত হন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে যে বর্ণনা পেয়েছি তাতে উদ্ধার হওয়া মানবকঙ্কালের বিভিন্ন অংশ একাত্তরে মারা যাওয়া রাজাকারদের। আমরা সে অনুযায়ী বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’
মন্তব্য করুন