চার বছর আগে বিলের মাঝখানে বসানো হয় খননযন্ত্র। এর মাধ্যমে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে অন্য জায়গায়। একই স্থান থেকে বালু তোলায় তৈরি হয়েছে গভীর পুকুর। ফলে ধসে পড়ছে আশপাশের কৃষকদের জমি। প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না তাঁরা। এ চিত্র নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নয়ানগর বিলের। সম্প্রতি সরেজমিন এসব তথ্য জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত খননযন্ত্রটি বসিয়েছেন একই ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের দাউদ মিয়া ও তাঁর ছেলে আমির হামজা। বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দাউদকে পাওয়া যায়নি। তবে খননের কারণে সৃষ্ট পুকুরের মাঝখানে তৈরি ঘরে বসে ছিলেন আমির হামজা ও একই এলাকার মোস্তফা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুরুতে ৯০ শতাংশ সরকারি জায়গা দখল করে বালু তোলা শুরু করেন দাউদ ও তাঁর ছেলে। পরে পাশের ৪৫ শতাংশ জমি কিনে নেন এক কৃষকের কাছ থেকে। সেখান থেকে মাটি কাটতে কাটতে প্রায় আড়াই একর আয়তনের গভীর পুকুর হয়ে গেছে। আশপাশের কৃষিজমি ভেঙে গেলে মালিকদের কিছু টাকা দিয়ে সেই জমি থেকে বালু তোলা শুরু করেন তাঁরা।

বালু তোলার ওই জায়গার পাশে ২১০ শতাংশের বেশি কৃষিজমি রয়েছে কৃষক শাহীনের। তিনি বিজয়নগর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে। শাহিন বলেন, গভীরভাবে পুকুর খননের কারণে আশপাশের ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে। তাঁর প্রায় ৮০ শতাংশ জমি ভেঙে সেই পুকুরে ধসে পড়ে। বাকি জমি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

চৌরাপাড়া গ্রামের ইসহাক মিয়া বলেন, ‘আমরা সাধারণ কৃষক। দাউদ মিয়া ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ায় আমাদের জমিও ভেঙে পুকুরে চলে যাচ্ছে। তাঁর কাছে জমি বিক্রি ছাড়া উপায় দেখছি না।’
তিনি জানান, তাঁদের জমিতে ধানচাষ সম্ভব হচ্ছে না। কারণ জমিতে সেচ দিলে পানি ওই পুকুরে চলে যায়। দ্রুত বালু তোলা বন্ধ হওয়া দরকার।

অভিযুক্ত দাউদ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ছেলে আমির হামজা দাবি করেন, ‘এখানে সরকারি কোনো সম্পত্তি নেই। আমাদের ১৬ কানি (৩০ শতাংশে ১ কানি) সম্পত্তি রয়েছে। এখান থেকে বালু উত্তোলন করছি।’ এতে কৃষকের কোনো ক্ষতি হচ্ছে বলেও মনে করেন না তিনি।

নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সাকিব হাসান বলেন, বিষয়টি জানতেন না। এভাবে মাটি কাটায় কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি হলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

ইউএনও মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, খোঁজ নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।