- সারাদেশ
- কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করেন ৮৪% পোশাক শ্রমিক
কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করেন ৮৪% পোশাক শ্রমিক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর জরিপ

কাজে ব্যস্ত পোশাক শ্রমিকরা। ফাইল ছবি।
পোশাক শ্রমিকদের ৮৪ দশমিক ২ শতাংশ তাঁদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করেন। ৯৩ শতাংশ শ্রমিক কমপক্ষে ৫ বছর শিল্পে কাজ করতে আগ্রহী। ৯১ দশমিক ২ শতাংশ কর্মী সময়মতো বোনাস পান। ৯৪ দশিমক ৪ শতাংশ কর্মী তাঁদের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) গবেষকরা ১০০টি কারখানা থেকে বিভিন্ন স্তরের ৫০০ কর্মীর ওপর জরিপ করে এমন তথ্য পেয়েছেন। ‘দ্য রানা প্লাজা এক্সপেরিয়েন্স : এনসিউরিং ওয়েলবিয়িং অ্যান্ড ট্রান্সফর্মিং দ্য আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি’ নামক বইয়ে এ জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে।
আইবিএ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত মঙ্গলবার আইবিএর এম শফিউল্লাহ মিলনায়তনে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বইটি সম্পাদনা করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ মোমেন ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। বইটির জন্য গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় করেন আইবিএর সহযোগী অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ ও প্রভাষক ফাতেমাতুজ যাহরা সাকি। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় যারা নিহত হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন, তাঁদের জন্য বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে।
অধ্যাপক মোমেন বইটি সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। বইটিতে তৈরি পোশাকশিল্পের ইতিহাস, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় অস্থিরতা, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং পরবর্তী সময়ে নানান কাজের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। গবেষণার জন্য ২৭টি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। বইটিতে ক্রেতা, বিদেশি ব্র্যান্ড, সাংবাদিক, শ্রমিক সংগঠন, পোশাক কর্মী, সরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম, প্রত্যক্ষদর্শী, ফটোসাংবাদিক, ভুক্তভোগীসহ স্টেকহোল্ডারদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ৩৬ জন আহতের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
আইবিএর জরিপ থেকে জানা যায়, অংশগ্রহণকারী ৮০ শতাংশ শ্রমিক তাঁদের বেতন নিয়ে সন্তুষ্ট। টয়লেট, স্যানিটেশন, লাঞ্চ আওয়ার এবং ক্যান্টিন, বিশুদ্ধ পানীয় জল, পরিবহন সুবিধার মতো কর্মক্ষেত্রের সুবিধাগুলোর বিষয়ে প্রায় ৯৫ শতাংশ কর্মী উচ্চ সন্তুষ্টি সম্পর্কে জানিয়েছেন। ৪ শতাংশ কর্মী কর্মক্ষেত্রে কোনো আঘাতের সম্মুখীন হননি। গড়ে ৭৫ শতাংশ কর্মী বেতন নিয়ে মাতৃত্ব এবং অসুস্থতার ছুটি পান। ৬৯ দশমিক ৪ শতাংশ তাঁদের কর্মস্থল থেকে ফায়ার ড্রিল প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আলোচকদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রানা প্লাজার দুর্ঘটনার কারণে সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। সেই চ্যালেঞ্জ জয় করার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর অন্যতম। সেই অগ্রগতিকে আরও গবেষণার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চলছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পরে পোশাকশিল্পের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান জানান, তৈরি পোশাকশিল্পের বিকাশ বাংলাদেশকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ ও ব্যবসায়িক চিন্তা-ভাবনা এবং শ্রমিক ও সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে আরও জোরালোভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা।
মন্তব্য করুন