স্বামীর সঙ্গে ঈদের কেনাকাটায় বেরিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার শিকার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গৃহবধূ মৌসুমি আক্তার (২৫)। বুধবার রাত ৯টার দিকে পাশের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের সিংলাব এলাকায় ঘটে এ হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী রাসেল মিয়াও আহত হয়েছেন। তবে পুলিশ ও স্বজনরা এ হত্যার জন্য রাসেলকেই সন্দেহ করছেন।

এদিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন আলাউদ্দিন (৬০) নামের এক ব্যক্তি। বুধবার রাতে সালটিয়া ইউনিয়নের জন্মেজয় গ্রামে হামলার শিকার হন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

সোনারগাঁয়ে নিহত মৌসুমি আক্তার রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়ার করিম হায়দারের মেয়ে। সূত্র জানায়, সাত বছর আগে একই এলাকার নেওয়াজ আলীর ছেলে রাসেল মিয়ার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের ছয় বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।

মৌসুমির ভাই সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই তাঁর বোনকে নির্যাতন করতেন স্বামী রাসেল। গত বছর টাকা এনে দিতে মারধরও শুরু করেন। বাধ্য হয়ে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকাও দেন তাঁর বাবা। সাজ্জাদের ভাষ্য, রাসেলের বিবাহবহির্ভূত একটি সম্পর্কের কথা ছয় মাস আগে জানতে পেরে বাধা দেন মৌসুমি। তখন আবারও নির্যাতনের শিকার হন তিনি। চার মাস আগে বাবার বাড়ি চলে আসেন মৌসুমি। ১৭ দিন আগে রাসেলের পরিবারের সদস্যরা এসে তাঁকে নিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে স্বামী রাসেলের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে গাউছিয়ার উদ্দেশে বের হন মৌসুমি আক্তার। রাত ১০টার দিকে তাঁর বাড়িতে ফোনে রাসেল জানায়, বাড়ি ফেরার পথে তাঁরা সড়কে ডাকাতির শিকার হয়েছেন। ডাকাতরা মৌসুমিকে খুন করেছে।

রূপগঞ্জের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাসেলের ভাষ্য, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে ডাকাতির শিকার হয়েছেন। ডাকাতরা মৌসুমিকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে।

তবে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যেখান থেকে লাশ উদ্ধার হয়েছে, ওই এলাকা দিয়ে বাড়ি ফেরার কথা নয় তাঁদের। নিহতের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন নেই। তাঁর গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে। শরীরে মাটি লেগে আছে। পিঠে সামান্য আঁচড় ছাড়া তাঁর স্বামীর শরীরেও তেমন ক্ষতচিহ্ন নেই।

গফরগাঁওয়ের জন্মেজয় গ্রামে নিহত আলাউদ্দিনের স্ত্রী খুকির ভাষ্য, কয়েকজনের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন মাদক সেবন করতেন তাঁর স্বামী। বুধবার রাতে সাজ্জাত ও কয়েকজনের ডাকে বের হন আলাউদ্দিন। বাড়ির উঠানেই মাদক সেবন করছিলেন তাঁরা। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আলাউদ্দিন চিৎকারে বেরিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।