- সারাদেশ
- টেলিটক সিম পেতে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা!
টেলিটক সিম পেতে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা!

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের বৈধভাবে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের সিম কেনার সুযোগ দেওয়া হতে পারে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর থেকে পাওয়া ফ্যামিলি কাউন্টিং নাম্বারের (এফসিএন) বিপরীতে একটি পরিবার একটি সিম কিনতে পারবে। সিম বিক্রির প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে ১০ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে সরকার। সম্প্রতি এ কমিটির প্রথম সভা হয় এবং সেখানে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বর্তমানে অবৈধভাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একাধিক অপারেটরের সিম ব্যবহার হচ্ছে। এর মাধ্যমে মাদক ব্যবসা, অপহরণ, মানব পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কাজ করছে রোহিঙ্গারা। খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সবচেয়ে দুর্বল। ফলে টেলিটকের সিম বিক্রির প্রক্রিয়া এ দেশে মিয়ানমারের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করছেন না তাঁরা।
সূত্র জানায়, গত মাসের শেষদিকে কমিটির প্রথম সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমারের মোবাইল ফোন অপারেটরদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী। ফলে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার দুটি উপায়ে আটকানো সম্ভব। সীমান্তে অন্তত ১ হাজার ১০০ জ্যামার স্থাপন করে মিয়ানমারের নেটওয়ার্ক দুর্বল করতে হবে। এ জন্য খরচ হবে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এটি সম্ভব না হলে বাংলাদেশি নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছে বিটিআরসি।
সভায় বলা হয়, বাংলাদেশি সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা স্থানীয় মানুষের মাধ্যমে নিবন্ধন করেন। কারণ, বিটিআরসির প্রচলিত নীতিমালায় এনআইডি কার্ড ছাড়া সিম কেনার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে কেনা সিম বাতিল করে এফসিএন নম্বরের বিপরীতে পরিবারপ্রতি একটি সিম কেনার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গার ডাটাবেজ হয়েছে। ইউএনএইচসিআরের করা এ ডাটাবেজ ব্যবহার করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, জিও ফেন্সিংয়ের (ভার্চুয়াল সীমা নির্ধারণ) মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় দেশীয় একটি কোম্পানির সিম বিক্রির কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। আলোচনার পর সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, রোহিঙ্গাদের টেলিটকের নির্দিষ্ট সিরিজের সিম দেওয়া যেতে পারে।
জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সমকালকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোন মোবাইল অপারেটর কাজ করবে, সে সিদ্ধান্ত দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের নির্দেশনা অনুসারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ কাজ করবে।’
মন্তব্য করুন