নালিতাবাড়ীর পাহাড় এলাকায় বন্যহাতির দল তাণ্ডব চালিয়েছে। বন বিভাগের নার্সারি এবং কৃষকের ক্ষেতের বোরো ধান খেয়ে ও পায়ে মাড়িয়ে লন্ডভণ্ড করে ফেলেছে।

বুধবার ভোরে মধুটিলা ইকোপার্কের ভেতরের নার্সারিতে ও পাশের পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের পাহাড়ি ঢালে ফসলের মাঠে তাণ্ডব চালায় হাতির দল। সে সময় হাতি তাড়াতে গিয়ে আহত হয়েছেন ওই এলাকার কৃষক বিজয় সাংমা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ি এলাকায় প্রায় দুই যুগ ধরে ৪০ থেকে ৪৫টি বন্যহাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। এই হাতিগুলো ধান পাকার মৌসুমে প্রায় প্রতি রাতেই খাবারের সন্ধানে ফসলের মাঠে হানা দেয়। বুধবার ভোরে মধুটিলা ইকোপার্কের ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে নার্সারির ক্ষতি করে। এতে চাপালিশ, ডেওয়া, অর্জুন, জারুল, পলাশ, জলপাই, বহেয়া ও আকাশমনি গাছের প্রায় ২৪ হাজার চারা খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে ফেলে। পরে বন বিভাগের লোকজন বন্যহাতিকে তাড়া করলে পার্কের বাইরে গিয়ে পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের বোরো ধান ক্ষেতে তাণ্ডব চালায়। এতে কৃষক শামছুল হকের ২৫ শতাংশ ও কৃষক আলবিনুছ সাংমার ২৫ শতাংশ জমির বোরো ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে। এ সময় হাতি তাড়াতে গিয়ে গুরুতর আহত হন বিজয় সাংমা নামের এক কৃষক। পরে স্বজনরা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

স্থানীয়রা জানান, বন্যহাতির দলটি পাশের গভীর জঙ্গলে অবস্থান করছে। আবারও ফসলের মাঠে তাণ্ডব চালাতে পারে। গারো পাহাড়ের বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘমেয়াদি মিশ্র বাগান সৃজন করায় বন্য হাতির অবাধ বিচরণ শুরু হয়েছে।

স্থানীয় বন বিভাগ বলছে, হাতির খাদ্য সংকট নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করা হচ্ছে।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলার রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাতে বন্যহাতির দল ইকোপার্কে ঢুকে নার্সারিতে তাণ্ডব চালিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২৪ হাজার চারার ক্ষতি করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এই চারাগুলো ঠিক না হলে চলমান অর্থবছরের সুফল প্রকল্পের বাগান সৃজনে সমস্যা হতে পারে। তিনি বলেন, বন্যহাতির তাণ্ডবে নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।