নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রায় ৯০ শতাংশ কিশোরী-তরুণী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। তবে তাঁদের পুরুষ সমবয়সীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি পুরো উল্টো। তাঁদের তুলনায় দ্বিগুণ সংখ্যক তরুণ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের গবেষণা প্রতিবেদনে নিম্ন আয়ের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে বৈষম্যের এ চিত্র উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

ইউনিসেফের শিক্ষাবিষয়ক পরিচালক রবার্ট জেনকিনস বলেন, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন বন্ধ করার মানে ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি সুবিধা নিশ্চিতের চেয়েও বেশি কিছু। এর মানে নারীকে উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও নেতা হওয়ার জন্য শক্তিশালী করে গড়ে তোলা। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা শ্রমবাজারে লিঙ্গবৈষম্য ঠেকাতে চাই, বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের মতো ক্ষেত্রে, আমাদের অবশ্যই তরুণদের (বিশেষ করে কিশোরী-তরুণী) ডিজিটাল দক্ষতা বাড়াতে সহায়তার মধ্য দিয়ে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থাটির ওই প্রতিবেদনে মূলত ডিজিটাল ক্ষেত্রগুলোতে ১৫ থেকে ২৪ বছরের তরুণ-তরুণীর সমতার ওপর জোরারোপ করা হয়েছে। আলোচনায় এসেছে নিম্ন, নিম্ন মধ্য ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহারের চিত্র। বিষয়টি আরও বিশদভাবে উপলব্ধি করতে অধিকতর তথ্য-উপাথ্যের প্রয়োজন বলে মনে করে ইউনিসেফ। তথাপি তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ও সংযুক্ত পৃথিবীতে মেয়েরা পেছনে পড়ে থাকছে। একবিংশ শতাব্দির শিক্ষা ও চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশের সুযোগ তারা সামান্যই পাচ্ছে।

‘ব্রিজিং দ্য ডিজিটাল ডিভাইড: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অ্যান আরজেন্ট কল ফর অ্যাকশন ফল ইক্যুইটেবল ডিজিটাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাইল অথবা ফোল্ডার কপি-পেস্ট করা, ইমেইল পাঠানো অথবা ফাইল স্থানান্তরের মতো সাধারণ ডিজিটাল কাজকর্মে পুরুষ সমবয়সীর তুলনায় মেয়েদের দক্ষতা ৩৫ শতাংশ কম। একই পরিবারে ছেলের চেয়ে মেয়েরা ইন্টারনেট ব্যবহারের অনেক কম সুযোগ পায়। এ কারণে কেবল ইন্টারনেট সুবিধা বাড়ালেও বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করে না জাতিসংঘের সংস্থাটি।

৪১টি দেশ ও অঞ্চলে চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, গৃহকর্তারা ছেলেদের হাতে মোবাইল ফোন দিতে যতটা আগ্রহ দেখান, মেয়েদের ক্ষেত্রে ততটা নন। ইউনিসেফ সব সরকার ও সহযোগীদের এ বৈষম্য দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং মেয়েদের ডিজিটাল বিশ্বে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।