- সারাদেশ
- চসিকের ২১ খাল-নালায় জলাবদ্ধতার শঙ্কা
চসিকের ২১ খাল-নালায় জলাবদ্ধতার শঙ্কা

বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা হয় চট্টগ্রাম শহরে। এ নিয়ে এক সংস্থা আরেক সংস্থাকে দোষারোপ করে দায় সারে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এত দিন ধরে সিটি মেয়র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলে আসছিলেন, গত বর্ষায় যদি গলাপানি হয়; এবার খালের বাঁধের কারণে পানি মাথার ওপর উঠবে।
তবে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড জানিয়েছে, তাদের প্রকল্পের কারণে এবার জলাবদ্ধতা হবে না। তবে প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১টি খাল ও ১৩০০ কিলোমিটার নালা-নর্দমা আবর্জনায় ভরাট হয়ে থাকার কারণেই পানি জমবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ শঙ্কা প্রকাশ করেন ওই ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদুর রহমান।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের সংস্কার কাজ করছি আমরা। খালে নির্মাণকাজের জন্য বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। সব বাঁধ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খালগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। প্রকল্পের কারণে জলাবদ্ধতা হবে না। কিন্তু প্রকল্পের বাইরে থাকা খাল-নালা-নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। এগুলো পরিষ্কারের দায়িত্ব চসিকের। তারা কাজ যথাযথ করলে জলাবদ্ধতা হবে না।
জলাবদ্ধতা নিয়ে পরস্পর দোষারোপ প্রসঙ্গে ওই কমান্ডার বলেন, ৩৬টি খালের কোথাও বাঁধ নেই। এখানে ব্লেম গেমের (দোষারোপ) কিছু নেই। মানুষকে কষ্ট দিতে কিংবা কাউকে দায়ী করতে চাই না। যার যার কাজ যথাযথ করলে জলাবদ্ধতা থাকবে না।
প্রকল্পটির পরিচালক কর্নেল শাহ আলী বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৪৫টি ব্রিজ ও ছয়টি কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেনাবাহিনী নির্মিত কোনো ব্রিজ ও কালভার্টের নিচে সেবা সংস্থাগুলোর লাইন নেই। যার কারণে আবর্জনা আটকে জলাবদ্ধতা হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু নগরের অন্যান্য ব্রিজ ও কালভার্টের নিচে গ্যাসলাইন, ওয়াসার লাইন কিংবা বিটিসিএলের পাইপলাইন আছে। এসব লাইনে বৃষ্টির পানির সঙ্গে আবর্জনা আটকে পানি জমে।
সংবাদ সম্মেলনে সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, সিটি করপোরেশন আইনে আবর্জনা ফেললে শাস্তির বিধান আছে। চসিক তা কার্যকর করতে পারে। এ বছর বর্ষায় জোয়ারের পানিতে আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকায় জলাবদ্ধতা হবে না বলে আশাবাদ দেন তিনি।
সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, শুধু ২১ খাল নয়। নগরের সব খালে আর্বজনা অপসারণে ২৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিছু খাল সিডিএর অধীনে থাকার পরও আমরা পরিষ্কার করছি। প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগে বাড়তি লোকবল নিয়োগ করে খাল-নালা পরিষ্কার করা হবে। আর খালে বাঁধ আছে কিনা, তদারকি করতে প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা আবুল হাশেমের নেতৃত্বে টিম গঠন করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ৯ জুলাই নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প নেয় সিডিএ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
মন্তব্য করুন