চট্টগ্রামের পটিয়ায় গৃহবধূ জেরিন আক্তারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার গভীর রাতে গৃহবধূর মামা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মো. রিদওয়ান বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এতে জেরিনের স্বামী দিদারুল আলমকে (৩৫) প্রধান আসামি করা হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকেই দিদারুল ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

পটিয়া থানায় রিদওয়ানের করা মামলায় দিদারুলের বড় ভাই আবু তৈয়ব (৩৭), তাদের ভাগনে মো. হৃদয়সহ (২২) তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজনকে আসামি করা হয়।  

মামলার এজাহারে বলা হয়, জেরিন আক্তারের (২২) সঙ্গে ২০২০ সালে দিদারুল আলমের বিয়ে হয়। করোনার কারণে তখন দেশে লকডাউন থাকায় উভয়ের পরিবারের সম্মতিতে ছোট পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। পরে জেরিনকে শ্বশুরবাড়িতে তুলে আনা হয়। এরপর থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রী খাওয়ানোর বিষয় নিয়ে জেরিনের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে স্বামীপক্ষ। বিয়ের ১১ মাস পর তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে বিদেশে চলে যান। দিদারুলের অনুপস্থিতিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন জেরিনকে বরযাত্রী খাওয়ানোর বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করে। বিষয়টি গৃহবধূ তাঁর বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনকে অবগত করেন। গত ৬ এপ্রিল জেরিনের স্বামী দেশে ফিরে এলে উভয় পরিবার আলোচনা করে আগামী ১৪ মে বরযাত্রী খাওয়ানোর দিন ধার্য করে। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থানকালে জেরিনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে গৃহবধূর পরিবারকে জানানো হয়, জেরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। 

মামলার বাদী মো. রিদওয়ান সমকালকে বলেন, তাঁর ভাগনিকে বরযাত্রী খাওয়ানো নিয়ে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা করত। পাশাপাশি যৌতুকের নানা ধরন নিয়ে জেরিনের শ্বশুরপক্ষ তাদের চাহিদার তালিকা আরও লম্বা করে। অথচ তারা বিয়ের সময় বলেছিল, তাদের কিছু লাগবে না।  

পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার সমকালকে বলেন, জেরিন আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। আসামিরা আত্মগোপনে রয়েছেন।  আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।