- সারাদেশ
- নিজ ঘরে থাকতে পারছেন না গৃহহীনরা
নিজ ঘরে থাকতে পারছেন না গৃহহীনরা

ফেনীর ফুলগাজীতে গৃহহীন তিন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েও স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে সেখানে উঠতে পারছে না। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে অসহায় পরিবারগুলো।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের নিলক্ষী গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে জানা যায়, গৃহ ও ভূমিহীন গোসাইপুরের নুরজাহান, মায়া বেগম ও গবতলা গ্রামের আবদুল হালিমের পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় নরুল আমিন মিয়া নামে এক প্রভাবশালীর অত্যাচারে তাঁরা সেই ঘরে থাকতে পারছেন না।
ভুক্তভোগী ভূমিহীন পরিবারগুলো জানায়, ঘরে উঠতে গেলেই তাদের ওপর হামলা চালান নরুল। ঘরে উঠলে নারীদের নির্যাতন এবং ঘরে আগুন দিয়ে তাঁদের হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন তিনি। এমনকি সরকারিভাবে নির্মিত ঘরের জায়গাটি তিনি নিজের বলে দাবি করছেন।
স্থানীয়রা জানান, গৃহহীনদের ঘর নির্মাণের পর থেকেই নরুল এভাবে বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি করে আসছেন। তিনি গৃহহীনদের জন্য নির্মিত শৌচাগারের সব ট্যাঙ্ক ভেঙে ফেলেছেন। বিদ্যুৎ সংযোগের তারসহ সরঞ্জামাদি ছিঁড়ে ও ভেঙে ফেলেছেন, স্নানাগারের সঙ্গে সংযুক্ত পাইপগুলোও ভেঙে ফেলেছেন।
ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা জানান, সরকার তাঁদের জমি ও ঘর সাফ কবলা দলিল করে দিয়েছে প্রায় তিন মাস আগে। কিন্তু তাঁরা সেই ঘরে এক ঘণ্টার জন্যও থাকতে পারেননি। জনস্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে টিউবওয়েল বসানোর জন্য তিনবার এলেও নরুল ও তাঁর স্ত্রী বাধা দেন। ফলে জনস্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন টিউবওয়েল না বসিয়েই চলে যায়। তাঁরা যেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলোতে বসবাস করতে পারেন, সে জন্য সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অভিযুক্ত নরুল আমিন মিয়া বলেন, এ জায়গা ১৯৮৪ সাল থেকে তাঁর দখলে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গাটি তিনি নিজের বলে দাবি করেন। ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শৌচাগারের ট্যাঙ্কের কিছু রিং বসানোর সময় ভাঙা ছিল। তিনি ঘরগুলোর কোনো কিছু ভাঙা বা নষ্ট করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলিম জানান, অভিযোগ তিনিও পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ইউএনওকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।
ইউএনও তানিয়া ভূঁইয়া বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সদর ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ গৃহহীনদের ঘরে বসবাসে বিঘ্ন সৃষ্টি করে, সরকারি কাজে বাধা দেয়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন