
হরিপুর জমিদার বাড়ি। ছবি-সমকাল
এক মাসের বেশি সময়ের চেষ্টায় দখলমুক্ত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হরিপুর জমিদার বাড়ি। নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফখরুল ইসলাম দখলমুক্ত কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যকে আমরা হারিয়ে যেতে দিতে পারি না। দখলমুক্ত হয়েছে। এখন দ্রুত সংস্কারকাজ করা হবে।’
জমিদার বাড়িটির দখলদার উচ্ছেদ ও সংস্কার নিয়ে গত বছর ৮ অক্টোবর ‘হতশ্রী অবস্থায় হতাশ সবাই’ শিরোনামে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন গত ১ এপ্রিল থেকে দখলমুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাড়িটি দখলমুক্ত হয়। যদিও জমিদারের স্ত্রী উমা রানী রায় চৌধুরীর স্নানের পুকুর বা ঘাটলা দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, জমিদার বাড়িতে ৫২টি পরিবার বসবাস করত। দখল ছাড়তে কয়েকবার নোটিশ দিলেও সরেনি। এমনকি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিতে চাইলেও বাড়ি ছাড়েনি তাঁরা। অবশ্য উচ্ছেদের পর এরই মধ্যে ৪১ পরিবারকে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১১টি হিন্দু পুরোহিত পরিবার ঘর না নিয়ে জমি কিনে অন্যত্র বসবাস করছে।
জমিদার বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘জমিদারের স্ত্রীর স্নানের পুকুর বেদখলে রয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা একাধিকবার দখলমুক্ত করতে গেলে নিবারণ দাসের ছেলে সংকর দাস বাধা দেন।’ তবে সংকর দাসের দাবি, ‘আমার পূর্বপুরুষ জমিদারের কাছ থেকে জমি কিনে পুকুরের মালিক হয়েছেন। মালিক হিসেবেই আমরা প্রতি বছর খাজনা দিচ্ছি।’
হরিপুর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আকিব আরাবি বলেন, ‘জমিদারের কাছ থেকে জমি কিনে অনেকেই মালিকানা দাবি করছেন। চূড়ান্তভাবে যাচাই-বাছাই শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (কুমিল্লা অঞ্চল) এ কে এম সাইফুর রহমান বলেন, ‘দখলমুক্তের পর বাড়ি পাহারায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও উপজেলা আনসার-ভিডিপির ৯ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়িটি নিয়ে অনেক পরিকল্পনা আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সংস্কারকাজ করা হবে।’
মন্তব্য করুন