- সারাদেশ
- উন্নয়নের ঢাকঢোল আছে নদী রক্ষায় উদ্যোগ নেই
উন্নয়নের ঢাকঢোল আছে নদী রক্ষায় উদ্যোগ নেই

দুষণে বিপর্যস্ত নদীর পানি। ছবি-সংগৃহীত
অব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার অভাবে দেশের নদীগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা। তাঁরা বলেন, যারা নদী দখল-দূষণ করছে, তারা সরকারঘনিষ্ঠ। তারা উন্নয়নের ঢাকঢোল বাজালেও দেশের নদীগুলো রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে তাঁরা এসব কথা বলেন। ‘জলবায়ু পরিবর্তন : বাংলাদেশ ও নদী’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি।
এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিস্তা নদীর পানি না পেয়ে দেশের একটি অঞ্চল মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু সরকার একটা শব্দও বলছে না। এক সময়ের প্রমত্ত বুড়িগঙ্গা এখন মৃতপ্রায়, দুর্গন্ধে নদীর পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না। এ সরকারের একটাই লক্ষ্য, ক্ষমতায় টিকে থাকা; দেশের জনগণের ভবিষ্যৎ সুন্দর করার কোনো আগ্রহ তাদের নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাভার-ধামরাইয়ে ছোট ছোট যে নদীগুলো ছিল সেগুলো প্রায় মরে গেছে। তুরাগ নদের পাশে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রশ্রয়ে-সহযোগিতায় নদের ওপরে ক্লাব গড়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিএনপি সরকার পলিথিন, টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন নিষিদ্ধ করেছিল, খাল খনন কর্মসূচি চালু করেছিল। ফলে ঢাকার দূষণ কমেছিল। কিন্তু বর্তমান ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর।
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে টিকে থাকতে হলে, সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে হলে দেশে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই। গণতন্ত্র নেই বলেই সরকারের জবাবদিহি নেই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারলে আন্তঃনদী নিয়ে যেসব সমস্যা, সেগুলো বিশ্বপরিমণ্ডলে তুলে ধরতে পারব।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সরকারের সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ দিল্লিতে গিয়ে নদী কমিশনে ন্যায্য হিস্যা আদায় করেন। এই শক্তি তাঁর ছিল। কারণ, তিনি নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন বলে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ওই সাহস নিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে বিএনপির ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ যখন নির্মাণ করতে যায়, তখনই আপত্তি করেছিল বিএনপি সরকার, একই সঙ্গে বিএনপিও আপত্তি করেছে।
ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের আলোচনা মাথা উঁচু করে দরকষাকষি করা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে নদীর ওপর অপরিকল্পিতভাবে সেতু ও শিল্পকারখানা করা হচ্ছে। অন্য কোনো দেশকে খুশি করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এতে নদীর বিশাল ক্ষতি করছি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ভারত বাঁধ নির্মাণ করে নদীর পানি প্রত্যাহার করায় নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বাঁচল কি মরল, সেটা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। বছরে চারবার যৌথ নদী কমিশনের সভা হওয়ার কথা; কিন্তু বছরের পর বছর কোনো সভা হয় না। সরকারকে মেরুদণ্ড সোজা করতে হবে। পানির ন্যায্য হিস্যা গ্যারান্টিসহ আদায় করতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ।
মন্তব্য করুন