ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।  এসব অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইনে তিনটি মামলায় ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাসিরনগর থানার ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কামার পেশায় যারা জড়িত আছেন তারা যেন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোন লোহার অস্ত্র তৈরি না করেন সে জন্য তাদের নিয়ে আলোচনাসভা করে সর্তক করা হয়। যারাই দেশীয় অস্ত্র বানাতে আসবে তাদের নাম ঠিকানা রেখে পুলিশকে অবহিত করার বিষয়ে একমত হন কামার ব্যবসায়ীরা।

নাসিরনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত একমাসে নাসিরনগর বেশকিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় কয়েক হাজার লোক আহত এবং বেশ কয়েকজন নিহত হন। সম্প্রতি ঈদের দিন ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে ধান মাড়াইয়ের জায়গা দখল নিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কৃষক জামাল হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ২৫টি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ।

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কাতরা, সড়কি, রামদা, বল্লম, টেঁটা, ফলা ও চল। যেসব গ্রাম থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সেসব গ্রামগুলো হলো-নূরপুর, হরিপুর, নরহা, চিতনা, ধরমন্ডল, শংকরাদহ, গোকর্ণ, কুন্ডা, কুন্ডা জেলে পাড়া, শ্রীঘর, চাপরতলা, ভোলাউক, উরিয়াইন, আতুকুড়া, মুকবুলপুর ও পূর্বভাগ।

হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের গ্রামে প্রায় সময়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারি হয়। পুলিশ আমাদের কাছে অস্ত্র উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা গ্রামবাসীকে নিয়ে আলোচনা করে সব দেশীয় অস্ত্র পুলিশের হাতে জমা করে দিয়েছি।

ভলাকুট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রুবেল মিয়া সমকালকে বলেন, নাসিরনগর উপজেলার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের এ অস্ত্র উদ্ধার কাজকে আমরা স্বাগত জানাই। আশা করি এ অভিযান সবসময় অব্যাহত থাকবে। তাহলে এলাকায় খুন-খারাবিসহ মারামারি কমে আসবে।

নাসিরনগর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লা সরকার বলেন, আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিয়মিত এ অভিযান চলবে।