- সারাদেশ
- কৌশলী ইসলামী আন্দোলন রাখছে ডামি প্রার্থীও
বরিশাল সিটি নির্বাচন
কৌশলী ইসলামী আন্দোলন রাখছে ডামি প্রার্থীও

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ভেতরে ভেতরে বড় প্রস্তুতি নিচ্ছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নির্বাচন কমিশনের সুযোগ-সুবিধা দ্বিগুণ নিতে দল মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি থাকছেন একজন ডামি প্রার্থীও। তিনি হলেন মনোনীত প্রার্থী সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীমের ভাই সৈয়দ এছাহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের। তিনি দলের কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি এবং চরমোনাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। প্রার্থী ফয়জুল করীম দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা। নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতি এবং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সুযোগে নিজেদের শহরে জয় পাবেন– এমনই আশা পীর পরিবারের।
এদিকে, ফয়জুল করীমের একমাত্র মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের মিলনমেলা ঘটায় পীর পরিবার। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, জাসদের আ. স. ম রবসহ সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী প্রায় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এতে অংশ নেন। আওয়ামী লীগের মধ্যে ছিলেন একমাত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের কোনো আওয়ামী লীগ নেতা বিয়ের অনুষ্ঠানে যাননি।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ জুনের নির্বাচনে মেয়র পদে শনিবার পর্যন্ত মোট ছয়জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এর মধ্যে হাতপাখার প্রার্থী ফয়জুল করীম ও সৈয়দ এছাহাক স্বতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, এছাহাক নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত প্রার্থী থাকবেন। তবে তিনি প্রচারে থাকবেন না। কারও কাছে ভোটও চাইবেন না। ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ, গাড়িসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দলের প্রার্থী ফয়জুল করীমের ছায়া হিসেবে কাজ করবেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দ এছাহাক সমকালকে বলেন, দলের দায়িত্বশীলদের সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র তুলেছেন এবং জমাও দেবেন। কোনো কারণে ফয়জুল করীমের প্রার্থিতা বাতিল হলে বিকল্প হিসেবে তিনি প্রার্থী হবেন। ভাইয়ের মনোনয়ন বৈধ হলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তখন দলের মুরুব্বিরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। থাকার প্রয়োজন হলে থেকে যাব।
বিয়ে প্রসঙ্গে সৈয়দ এছাহাক বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও মহাসচিব পদধারী পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হয়।
ইসলামী আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য কে. এম শরীয়ত উল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা আমন্ত্রিত ছিলেন। তবে তাঁরা কেউ যাননি। এটি নিছক পারিবারিক অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসূত্র নেই। তারপরও চলমান পরিস্থিতিতে এই মিলনমেলার রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এক বছর আগে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। পাত্রের বাবা ইংল্যান্ডের জ্যামাইকা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব। তিনি সম্প্রতি দেশে ফিরলে শনিবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পীর পরিবার।
কাল বরিশালে আসছেন ফয়জুল
গত ২৭ এপ্রিল চরমোনাই মাদ্রাসা মিলনায়তনে ফয়জুল করীমের উপস্থিতিতে সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা দেন দলের আমির পীর সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম। পরদিন তিনি ঢাকায় চলে যান। আগামীকাল সোমবার তিনি আবার সড়কপথে বরিশাল আসবেন। এ উপলক্ষে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। নগরে প্রবেশমুখ গড়িয়ারপাড় মোড় থেকে কমপক্ষে দুই হাজার মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে তাঁকে নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে নিয়ে আসা হবে বলে জানা গেছে। সেখানে প্রার্থী ফয়জুল করীমসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বক্তৃতা করবেন। এ শোডাউন সফল করতে কয়েকদিন ধরে দলের পক্ষে বড়সড় প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন