- সারাদেশ
- সিলেটে পুলিশ হার্ডলাইনে, গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপি
সিলেটে পুলিশ হার্ডলাইনে, গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপি

সিলেটে মিছিল থেকে হামলার অভিযোগে গত মঙ্গলবার মামলা করে পুলিশ। এরপর গত চার দিনে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) বিএনপির অন্তত ১৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে। এরপর থেকে সিলেট বিএনপিতে শুরু হয়েছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।
নিয়মিত মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে– পুলিশ এমন দাবি করলেও তা মানতে নারাজ বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, সিলেট সিটি নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নির্বাচনে বিএনপি নেতা ও সম্ভাব্য একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীর অভিযোগ, নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বিএনপির এক শীর্ষ নেতা দাবি করেন, ২০ মে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক নির্বাচন করবেন কিনা, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। তিনি যাতে নির্বাচন থেকে সরে যান, সে জন্যই আগাম গ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন সমকালকে বলেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, তা দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে। তারপরও কেন হঠাৎ গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? মেয়র আরিফুল হকের ঘোষণায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করতেই পুলিশ আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে মনে করেন তিনি।
গত মঙ্গলবার নগরীতে জেলা ও মহানগর ছাত্রদল মিছিল করে। এ সময় মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ঘটনাস্থল থেকে আট নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের পর ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় ১৫-১৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
তবে ১৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে গত শুক্রবার মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইন ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেছেন, পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সিলেটের রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গ্রেপ্তার ছাড়াও অনেক নেতাকর্মীর বাসায় তল্লাশি করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী বাসাবাড়িতে থাকছেন না। কাউকে পুরোনো মামলায়, কাউকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আবার মামলা না থাকলে অন্য মামলায় আসামি করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিএনপি নেতা ডা. বদরুল ইসলামকে দক্ষিণ সুরমা খোজারখলার নিজ ফার্মেসি থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। অথচ তাঁকে ২০২২ সালে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার একটি মামলায় আদালতে তোলা হয়।
নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমান কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লোদি কয়েস সমকালকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে পুলিশ গ্রেপ্তার শুরু করেছে। আমার এলাকা থেকে সিটি করপোরেশনের এক কর্মচারীকেও ধরে নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ না হলে কীভাবে নির্বাচন করব?’
এসএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ‘কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে না। যাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাঁরা কোনো না কোনো মামলার আসামি। আর এটি পুলিশের নিয়মিত কাজ।’
মন্তব্য করুন