- সারাদেশ
- অস্তিত্বহীন ব্যবসার নামে ২৫ কোটি টাকা লেনদেন
অস্তিত্বহীন ব্যবসার নামে ২৫ কোটি টাকা লেনদেন

সিরাজগঞ্জের স্বর্ণ চোরাকারবারি বিধান চন্দ্র সরকার অস্তিত্বহীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা লেনদেন করেছেন। দেশের সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় এসব টাকা জমা দেওয়া হয়। পরে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংক থেকে এ টাকা তুলে নেন বিধান।
এ ছাড়া স্বর্ণের ব্যবসার নামে বিধান ও তাঁর বোনের স্বামী কার্তিক চন্দ্র সরকার যৌথভাবে স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে অর্থ পাচার করেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে এসব তথ্য-প্রমাণ উঠে এসেছে। বিধান ও কার্তিককে অভিযুক্ত করে সোমবার বগুড়ার আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছে সিআইডি। অর্থ পাচারের সময় ২০২০ সালে ৬২ হাজার ইউএস ডলারসহ বগুড়ায় ধরা পড়েন কার্তিক। তবে বিধান এখনও পলাতক।
সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান সমকালকে বলেন, বিধান ও কার্তিকের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে অর্থ পাচারের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শশধর চন্দ্র সরকারের ছেলে বিধান চন্দ্র সরকারের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়ক এলাকায়। ভগ্নিপতি কার্তিক সরকারের বাড়ি ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়া বাজারের চালাপাড়ায়, তাঁর বাবা রবীন্দ্র লাল সরকার। বিধান ‘ওয়েভ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামে সিরাজগঞ্জের নিজ বাড়ির ঠিকানায় ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন। আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার নামে লাইসেন্সটি নেওয়া হয়েছিল। অথচ ওই ঠিকানায় কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নেই। বিধান ও কার্তিক মূলত স্বর্ণ চোরাকারবারি। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিধানের কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অন্তত ২৫ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই টাকা সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। স্বর্ণ বেচাকেনার পর টাকা ব্যাংকে রাখা হয়। সীমান্ত দিয়ে তাঁরা স্বর্ণ পাচার করতেন। এ ছাড়া তাঁরা চোরাইপথে দেশে স্বর্ণ নিয়ে আসতেন।
২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি বগুড়ার শেরপুরের গাড়িদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে কার্তিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তল্লাশি করে সে সময় তাঁর কাছে ৬২ হাজার ১৫০ ইউএস ডলার ও ৫৭ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বগুড়া কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বিশেষ ক্ষমতা আইনে শেরপুর থানায় মামলা করেন। পরে আসামির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নিতে সিআইডিকে চিঠি দেওয়া হয়। এরপর সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম স্কোয়াড অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বিধান ও কার্তিক যৌথভাবে স্বর্ণ বেচাকেনা করেন। তাঁদের কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নেই।
মন্তব্য করুন