খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে সোলার প্যানেল বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিনামূল্যের প্যানেল বিতরণে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ৯৫৪টি সোলার প্যানেল নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন উপকারভোগীরা।

 ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্প’-এর আওতায় বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এসব বিতরণে বাটনাতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম, ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মমিন, মানিক ত্রিপুরা, মো. মহরম আলীসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফলে দেড় মাস ধরে প্যানেলগুলো ছুদুরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে ছিল।

সুবিধাভোগী ও স্থানীয়রা জানান, তালিকা অনুযায়ী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে গত ২১ মার্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আসেন পার্বত্য বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আলম চৌধুরী। টাকার বিনিময়ে নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি জানতে পেরে বিতরণ স্থগিত করে চলে যান তাঁরা। এ সময় উপকারভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন।

তবে নির্দেশনা অমান্য করে প্রস্তাবিত তালিকায় স্বামীর পরিবর্তে স্ত্রী, বোনের পরিবর্তে ভাই ও ভাইয়ের পরিবর্তে বোনের নাম দিয়ে নতুন তালিকা করার অভিযোগ ওঠে। ফের ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগও করেন উপকারভোগীরা।

স্থানীয় বীর মুক্তিযো দ্ধা আমির আলী জানান, তিনি ৩ হাজার টাকা দিয়েছেন। এতদিন আশায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ সোলারগুলো নিয়ে গেছে। তুলাবিলার আকতার হোসেন, গোরখানার গিয়াস উদ্দিন ও ছুদুরখীলের মোহাম্মদ আলী বলেন, অনেক দিন ধরে মানুষ সৌরবিদ্যুতের আলো পাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল। শেষ মুহূর্তে স্থগিত হয়ে গেল। চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যরাও কিছু বলছেন না।

এ বিষয়ে বাটনাতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম বলেন, সোলারের ব্যাটারিগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে নষ্ট হতে পারে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ নিয়ে গেছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে বিতরণ করা হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্পের কনসালট্যান্ট হাসান শাহরিয়ার বলেন, ব্যাটারিগুলো নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। লংগদুসহ কয়েকটি উপজেলায় বিতরণ কার্যক্রম চলছে। ফেলে না রেখে সেসব উপজেলায় এগুলো বিতরণ করা হবে। কর্তৃপক্ষ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করলে মানিকছড়িতেও বিতরণ করা হবে।