- সারাদেশ
- তোরণ অপসারণের নোটিশ নিয়ে মেয়র ও এমপির সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১০
তোরণ অপসারণের নোটিশ নিয়ে মেয়র ও এমপির সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১০

মেয়র ও এমপির সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় তোলা ছবি
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে এমপির নামে টানানো তোরণ অপসারণের পৌর নোটিশ নিয়ে দ্বন্দ্বে এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডল ও মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার বিকেলে বেলকুচি পৌর এলাকার চালা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভেতরে ও সামনে সংগঠিত ওই সংঘর্ষের ঘটনায় এমপির সমর্থক পাভেল এবং মেয়রের সমর্থক শিপন, নাবিন মণ্ডল, মমিন, বাবু, মনসুরসহ দশ জন আহত হন। এদের মধ্যে শিপনকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাতসহ রক্তাক্ত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় দিবস ও দলীয় কর্মসূচিতে উপজেলার বেলকুচি-এনায়েতপুর সড়কের গুরত্বপূর্ণ অংশে এমপির নামে তার সমর্থকরা তিনটি তোরণ নির্মাণ করেন। ওইসব তোরণ দীর্ঘদিন অপসারণ না করায় সম্প্রতি এমপিকে নোটিশ দেন পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা। ওই ঘটনায় এমপির সমর্থকরা মেয়রের ওপর ক্ষুব্ধ হন। এরই জেরে শনিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হাজির হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করার কথা ছিলো তাদের। এর আগেই গোপন খবর পেয়ে দলীয় কার্যালয়ে পৌর মেয়র রেজা ও তার সমর্থকরা সেখানে হাজির হন। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা এবং পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। বেলকুচি থানা পুলিশ সেখানখার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যার্থ হয়। পরে জেলা থেকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ ও সলঙ্গা থেকে র্যাব ঘটনাস্থলে আসে। সন্ধার পর এমপির সমর্থকরা চালা গ্যারেজে ও মেয়রের সমর্থকরা তার বাড়িতে অবস্থান নেয় বলে জানা গেছে।
বেলকুচির মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, ‘দলীয় ত্যাগী ও তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন ও উপজেলায় সরকারি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় এমপির সঙ্গে সহদর বেলকুচি উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, তার শ্বশুর সাবেক মন্ত্রী বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, তার স্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস ও আমার সঙ্গে দীর্ঘদিনের শীতলতর সম্পর্ক রয়েছে। এর আগে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পার্টি অফিসে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহম্মেদকে মারপিট করেন এমপির লোকজন। তার স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার ওপর ক্ষুব্ধ তিনি। সুযোগ ফেলেই তিনি আমাদের হেয় ও ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। বেলকুচি-এনায়েতপুর সড়কে এমপি দীর্ঘদিন থেকে বেশ কটি তোরণ নির্মাণ করে পথচারী ও যানবাহন চালকদের বিড়ম্বনায় ফেলেছেন। ওইসব তোরণ অপসারণে তাকে পৌরসভা থেকে নোটিশ দ্রেয়া হয়। যার কারণে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কৌশলে তার লোকজনকে দিয়ে আমাকে না পেয়ে সমর্থকদের মারপিট করেন।’
এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডল বলেন, ‘বেলকুচিতে কিছু হলেই মেয়র ও ভাই আমার ওপর আঙুল তোলেন, এটা নতুন নয়। উপজেলা নেতাকর্মীরা ওই তোরণ নির্মাণ করলেও নোটিশ দেওয়া হয় আমাকে। এ নিয়ে শনিবার বিকেলে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করতে দলীয় অফিসে জমায়েত করার চেষ্টা করে। মেয়র রেজা ও তার লোকজন তাদের বেধড়ক মারপিট করে। রেজার নেতৃত্বে মহিলা এক নেত্রীকে শারীরিক হেনেস্তা করা হয়, যা মোটেই কাম্য নয়।’
ডিবি পুলিশের ওসি রওশন আলী জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বেলকুচি থানার ওসি আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘তোরণ অপসারণের পৌর নোটিশ নিয়ে দ্বন্দ্বে সংগঠিত সংঘর্ষে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি।’
মন্তব্য করুন