- সারাদেশ
- বিয়ের প্রস্তাব না রাখায় স্কুলছাত্রীর ভাইকে খুন
বিয়ের প্রস্তাব না রাখায় স্কুলছাত্রীর ভাইকে খুন

চার বছরের শিশু আবদুল্লাহ বায়েজিদের মরদেহ পাওয়া যায় ধানক্ষেতে
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ধানক্ষেতে এক শিশুর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ পাওয়া গেছে। পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ চার বছরের আবদুল্লাহ বায়েজিদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর রোববার তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেশী মাদকাসক্ত এক তরুণ বিয়ের প্রস্তাব দেয় বায়েজিদের বোনকে। এ প্রস্তাব গ্রহণ না করায় শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন অভিযুক্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন এলাকাবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে চারজনকে।
নিহতের মা রায়হানা বেগম বলেন, আমার স্বামী সৌদি প্রবাসী। দুই সন্তান নিয়ে আমার সংসার। মেয়েটি বড়, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকমাস ধরে তাকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করছিল প্রতিবেশী শিরেকুল ইসলামের ছেলে বখাটে রোমান ইসলাম। এক পর্যায়ে তার পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। আমার মেয়ে নাবালিকা, তাছাড়া ছেলেটিও মাদকাসক্ত। তাই বিয়ের প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তারা। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
স্থানীয়রা জানান, রোমান মাদকাসক্ত। তার নামে গ্রামের মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অভিযোগ আছে। সে ওই স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে বিরক্ত করে আসছিল। একাধিকবার প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছে। তাতে মেয়েটি সাড়া না দেওয়ায় তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল রোমান। এরই এক পর্যায়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটল। শনিবার রাতে লাশটি উদ্ধারের পর গ্রামবাসী ঘাতক সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তার বাড়িটি জ্বালিয়ে দেন। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করায় পরিস্থিতি সাময়িক শান্ত হলেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বায়েজিদের লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। তার কাছে রায়হানা বেগম অভিযোগ করেন, গত ৮ মে বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় বায়েজিদ। তাকে কোথাও খুঁজে না পাওয়ায় পরদিন থানায় জিডি করি। তখন বিষয়টি তদন্তের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই বুলবুলের ভূমিকা সন্তুষ্টজনক ছিল না। তাকে বারবার সন্দেহভাজন হিসেবে শিরেকুল ও তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। এ সময় বায়েজিদ হত্যায় ন্যায়বিচার পেতে সহায়তার আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার কামাল।
দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই বুলবুল বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা চালাই। কিন্তু তখন এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। আমাদের চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না।
পলাশবাড়ী থানার এসআই রাজু ইসলাম জানান, শনিবার বায়েজিদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পরই সন্দেহভাজন হত্যাকারী হিসেবে প্রতিবেশী শিরেকুল ও তার ছেলে রোমানকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার রোমানের মা কবিতা বেগম ও তার বন্ধু শরিফুল ইসলামকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন