গাড়ির তথ্য এন্ট্রি না করে বন্দর মাশুল ও ভ্যাট বাবদ আদায়কৃত ১২ লাখ ৬১ হাজার ৯০২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার দুদক কুমিল্লা সমন্বিত কার্যালয়ে মামলাটি করেন সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম। মামলার আসামি আবদুল কাদের জিলানী বর্তমানে বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত ও তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

সমকালকে এসব তথ্য জানান দুদক কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুর রহমান।

মামলার অভিযোগ করা হয়েছে, আবদুল কাদের জিলানী আখাউড়া স্থলবন্দরে ট্রাফিক পরিদর্শক পদে দায়িত্বপালনকালে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ হাজার ৮৯০টি গাড়ি প্রবেশ করে। এর মধ্যে তিনি ১১ হাজার ৯৮৩টি গাড়ি প্রবেশের তথ্য রেজিস্টারে এন্ট্রি করেন। বাকি ১০ হাজার ৯০৭টি গাড়ি প্রবেশের তথ্য এন্ট্রি না করে বন্দর মাশুল ও ভ্যাট বাবদ আদায়কৃত ১২ লাখ ৬২ হাজার ৯০২ টাকা ৮০ পয়সা তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলতাফ হোসেনকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তিনি দীর্ঘ অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই ট্রাফিক পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশসহ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পরবর্তী সময়ে মো. আলতাফ হোসেন অবসরে যাওয়ায় চলতি বছরের ১১ এপ্রিল সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলমকে ওই ট্রাফিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

এ বিষয়ে মামলার আসামি বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত ট্রাফিক পরিদর্শক (আখাউড়া স্থলবন্দরের সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক) আবদুল কাদের জিলানী মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় মামলা করে ব্যবস্থা নিয়েছে ও আমি ওই টাকা জমা দিয়েছি। বিভাগীয়ভাবে অভিযোগ নিষ্পত্তি হওয়ার পর এখন নতুন করে দুদকের মামলা দায়েরের বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।’

দুদক কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘আখাউড়া স্থলবন্দরের সাবেক ট্রাফিক কর্মকর্তা আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’