- সারাদেশ
- হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় ৫ বছর
চাঞ্চল্যকর একরাম হত্যা মামলা
হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় ৫ বছর

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম পাঁচ বছর ধরে হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় থমকে আছে। ২০১৮ সালে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ৩৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর আদালত। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৩ আসামি কারাগারে থাকলেও ১৬ জন এখনও পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, ডেথ রেফারেন্স মামলার ক্রমানুসারে চলতি বছরই একরাম হত্যা মামলার শুনানি হওয়ার কথা। এদিকে পলাতক আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া এবং হাইকোর্টে পাঁচ বছর ধরে মামলাটি ঝুলে থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন একরামের বড় ভাই ও মামলার বাদী জসিম উদ্দিন। তিনি সমকালকে বলেন, ‘বিচারিক আদালতে রায় হওয়ার পর পাঁচ বছর পেরিয়েছে। উচ্চ আদালতে চূড়ান্ত বিচার শেষ না হওয়ায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে না। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি এখনও পলাতক। পুলিশ বলছে, আসামিরা বিদেশে পলাতক। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে এনে অবিলম্বে রায় কার্যকর করা হোক। নয় তো আদালতের রায়ের মধ্যেই ন্যায়বিচার থমকে থাকবে।’
২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জসিম উদ্দিন আদালতে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ এ মামলার রায় দেন ফেনীর দায়রা জজ আদালত। রায়ে ৩৯ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। তবে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী মিনারসহ ১৬ জনকে খালাস দেন আদালত।
রায়ে বলা হয়, স্থানীয় নির্বাচন থেকে আসামিদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণেই একরামকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর বিচারিক আদালত থেকে বিধি অনুযায়ী মামলার নথিসহ রায় হাইকোর্টে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জেল আপিল করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটির পেপারবুক তৈরি করা হয়। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৩ জন বর্তমানে কারাগারে আছেন। আটজন জামিনে মুক্ত হয়ে এবং বাকি আটজন শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।
পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ফেনী সদর মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ আসামি কারাগারে এবং ১৬ জন বিদেশে পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে সব তৎপরতা চালাচ্ছি। তাঁদের দেশে ফেরাতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড এলার্ট জারির জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১৬ আসামির সাজা নিশ্চিতে হাইকোর্টে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আপিলও ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল শুনানির সময় গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সমকালকে বলেন, মামলার পেপারবুক তৈরি হয়ে আছে। শুনানির জন্য রাষ্ট্রপক্ষও প্রস্তুত রয়েছে। মামলার ক্রমানুসারে চলতি বছর এটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসার কথা। আসামি পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, বর্তমানে হত্যা মামলায় ২০১৮ সালের ডেথ রেফারেন্স শুনানি চলছে। আমরা শুনানির জন্য অপেক্ষা করছি।
মন্তব্য করুন