- সারাদেশ
- ‘বেশি মানুষ উঠলেই সেতুটি দুলতে থাকে’
‘বেশি মানুষ উঠলেই সেতুটি দুলতে থাকে’

কাঁঠালিয়ার আউরা খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে চলাচল করছে মানুষ সমকাল
সেতুটির লোহার পিলারের ওপর কাঠের ছাউনি ছিল। কাঠ নষ্ট হয়ে গেলে জেলা পরিষদের অর্থায়নে সিমেন্টের স্লাব বসানো হয়। ২০১৬ সালে ১ লাখ টাকা দিয়ে এটি মেরামত করে। তবে ২০১৭ সালে একটি বালুবাহী কার্গোর ধাক্কায় সেতুর মাঝের পিলার বাঁকা হয়ে যায়। পরে স্থানীয়ভাবে মেরামত করে কোনো রকমে চলাচল করছে মানুষ। কথাগুলো বলছিলেন ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল কবির পারভেজ।
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলা সদরের আউরা খালের ওপর রয়েছে সেতুটি। জরাজীর্ণ হয়ে এখন এটি ঝুঁকিপূর্ণ। বেশিরভাগ লোহার পিলার নষ্ট হয়ে গেছে। একসঙ্গে বেশি লোক উঠলে কাঁপতে থাকে। অথচ প্রতিদিন দু’পাশের হাজারো মানুষ ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী চলাচল করে। এরপরও মেরামত বা নতুন সেতু করার উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, কাঁঠালিয়া-আউরা কৈখালী-ভান্ডারিয়া ভারানী খালের ওপর ১৯৬৬ সালে নির্মিত হয় সেতুটি। স্বাধীনতার পর এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় জেলা পরিষদ। এরপর তিন-চারবার মেরামত করা হলেও তা তেমন কাজে আসেনি। সেতুর পূর্বপাশে উপজেলা পরিষদ, থানা, মূল শহর, সদর ইউনিয়ন পরিষদ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, টিঅ্যান্ডটি, কাঁঠালিয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
সেতুটির পশ্চিমে ঐতিহ্যবাহী আউরা বাজার, আউরা জয়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফায়ার সার্ভিস অফিস, বটতলা বাজার ও আমুয়া বন্দর। প্রতিদিন শিক্ষার্থী ছাড়াও কর্মজীবী ও অফিসগামী হাজারো মানুষ নড়বড়ে এ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। নিচ দিয়ে বার্জ, কার্গো জাহাজ, ফিশিং ট্রলারসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করে।
কাঁঠালিয়া পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জলিলুর রহমান আকন বলেন, সেতুটির যে অবস্থা, শিক্ষার্থীরা পার হতে ভয় পায়। বেশি লোক উঠলে দুলতে থাকে।
" একসময়ের খরস্রোতা আউরা খালের ওপর সেতুটি কাঁঠালিয়া-আমুয়া-পাটিখালঘাটা ও চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। এটি যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বহুবার জেলা পরিষদকে জানানো হলেও কাজ হয়নি।
- সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহামুদুল হক নাহিদ সিকদার
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহামুদুল হক নাহিদ সিকদার বলেন, একসময়ের খরস্রোতা আউরা খালের ওপর সেতুটি কাঁঠালিয়া-আমুয়া-পাটিখালঘাটা ও চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। এটি যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বহুবার জেলা পরিষদকে জানানো হলেও কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী দিপুল কুমার বিশ্বাস বলেন, দু’পাশে এলজিইডির রাস্তা রয়েছে। তবে সেতুটি জেলা পরিষদের হওয়ায় বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না। এডিবির প্রকল্প ছাড়া এটি মেরামতের সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে সেতু মেরামতের জন্য জেলা পরিষদকে চিঠি দেওয়া হলেও জবাব না দেওয়ায় কাজ করা যাচ্ছে না। তারাও কাজটি করছে না।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এমাদুল হক মনির বলেন, সেতুর যে অবস্থা, তাতে নতুন করে পিলার দিয়ে মেরামত না করলে লাভ হবে না। চেষ্টা চলছে বড় কোনো বরাদ্দ আনা যায় কিনা।
মন্তব্য করুন