সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিমসাগর আম দেশের সীমানা পেরিয়ে গেছে ইউরোপের বাজারে। তবে এবার মুদ্রার উল্টোপিঠও দেখতে হচ্ছে চাষিদের। ঘূর্ণিঝড় মোকা আতঙ্ক, জেলার বাইরের ক্রেতা না আসা আর অসাধু ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁদের।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মতো সর্বস্ব হারানোর ভয়ে ‘মোকা’ আঘাত হানার আগে চাষিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ১২ মে’র পরিবর্তে ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ আম বাজারজাত করার অনুমতি দেয় প্রশাসন। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা অপপ্রচার করে চাষিদের অপরিপক্ব আমও বাজারজাত করতে উৎসাহিত করে।

সীমান্তবর্তী মাদ্রা গ্রামের আম ব্যবসায়ী লালটু হোসেন জানান, আম বিক্রির হিড়িকে ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে আগাম জাতের গোবিন্দভোগ আমের দাম কমেছে। ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। ঘূণিঝড়ে ক্ষতির আশঙ্কায় অধিকাংশ চাষি নামমাত্র মূল্যে বাগান বিক্রি করেছেন।

গোবিন্দভোগ বাজারজাতের এ সুযোগ নিয়ে হিমসাগর আমও অপরিপক্ব অবস্থায় বাজারে উঠতে শুরু করে। গত বছর হিমসাগর আম বাজারজাত শুরু হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ দরে। এবার সে আমের দাম হাজার টাকায় নেমে এসেছে বলে আম ব্যবসায়ী রেজাউল জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ১৪ মে’র আগেই হিমসাগর আম বাজারজাত শেষ করেছেন। অপরিপক্ব আম কিনে ক্রেতারাও ঠকেছেন। আমে দাগ, ছোটসহ নানা অজুহাতে ১ হাজার ৬০০ টাকার বেশি দাম পাচ্ছেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা।

দেয়াড়ার চাষি মিজানুর রহমান ও সোনাবাড়িয়ার মাহিদ রহমান জানান, বাইরের ক্রেতা সাতক্ষীরার আম কিনতে না আসায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অনেকের খরচের টাকা উঠছে না।

এ বিষয়ে স্থানীয় আম ব্যবসায়ী কামারালী গ্রামের আব্দুল্লাহ বলেন, এ বছর প্রচুর আম হয়েছে। বাজারে যেসব আম উঠছে, তা ছোট ও দাগ রয়েছে। বাইরের ক্রেতা না আসার পাশাপাশি চাহিদামতো আম কেনা যাচ্ছে না। ফলে এ বছর দাম কম।

কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, বাইরের ক্রেতারা না আসায় এবার আমের বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়নি।