নানা কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষ করে উচ্চ শব্দের সংস্পর্শে আসার কারণে শ্রবণ ইন্দ্রিয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা মতে, বিশ্বজুড়ে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ যার বড় অংশ তরুণ ‘অনিরাপদ শোনার অভ্যাসের কারণে’ শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেলে মানুষ যেমন সহসাই ডাক্তারের পরামর্শ নেয় এবং প্রয়োজনে চশমা ব্যবহার করে, শ্রবণশক্তি হ্রাসের ক্ষেত্রে তেমন স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা যায় না। শ্রবণযন্ত্র তথা হিয়ারিং এইড ব্যবহারকে অনেকে ঝামেলাপূর্ণ বিব্রতকর হিসেবে দেখে থাকেন। এটি আবার ব্যয়বহুলও বটে। তবে হিয়ারিং ডিভাইসকে আরও আকর্ষণীয় ডিজাইনের এবং প্রযুক্তিবান্ধব করা গেলে বদলে যেতে পারে ধারণা।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অটোলারিঙ্গোলজি বিভাগের অডিওলজির প্রাক্তন প্রধান কেভিন ফ্রাঙ্ক এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, শ্রবণযন্ত্রগুলো সস্তা এবং ফ্যাশনের অংশ করা গেলে আরও বেশি মানুষ ব্যবহার করতে উৎসাহিত হবেন। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনায়াসে রকমারি হেডফোন ব্যবহার করছেন। কোনোটার তার গলায় ঝুলে থাকে, কোনোটার মাথায় ব্যান্ডের মতো পরা থাকে, কোনোটা আবার তারবিহীন– এগুলো ফ্যাশনের অংশ হিসেবেই নিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। কিন্তু হেয়ার এইডের বেলায় ঘটছে বিপরীত চিত্র। এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে ভূমিকা রাখতে পারেন বিশ্বসেরা হেডফোন নির্মাতারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত বছর হালকা থেকে মাঝারি শ্রবণশক্তি হারানো লোকেদের জন্য ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) হিয়ারিং এইড বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। আর এর সুবিধাটাই নিতে যাচ্ছে হেডফোন নির্মাতা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। কেভিন ফ্রাঙ্ক বলেছেন, ‘শ্রবণ হ্রাস একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য উদ্বেগ।
বর্তমানে সনি এবং জাবরার মতো বিশ্বমানের ব্র্যান্ড শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হিয়ারিং এইড হেডফোন নিয়ে কাজ করছে। কোম্পানিগুলো বাজারে আনতে যাচ্ছে হিয়ারিং এইড ডিভাইস।
সনি, জাবরা বা বোসের ব্র্যান্ডের হিয়ারিং এইড নির্মাণের অনুমতি শ্রবণ সহায়ক নতুনদের কিছুটা আরাম দিতে পারে। এটি নিয়ে অ্যাপলও কাজ করছে। এয়ারপডের চিপ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে শ্রবণসহায়কও হয়। শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা দূর করতে অ্যাপলের ছোট একটি উদ্যোগই যথেষ্ট বলে মনে করছেন ফ্রাঙ্ক।ফোনের হেলথ অ্যাপে ইনপুট করা যেতে পারে এবং এর পর উপযুক্ত শব্দগুলোকে প্রসারিত করতে ডিভাইসের মাইক্রোফোন ব্যবহার করে স্বচ্ছতা মোডে এয়ারপড প্রোর সেটিংস পরিবর্তন করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ জন্য এয়ারপডকে মেডিকেল ডিভাইস হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হবে। ওটিসি শ্রবণযন্ত্রগুলো কেবল মৃদু থেকে মাঝারি শ্রবণশক্তি হ্রাসপ্রাপ্ত মানুষের জন্য কাজের। আরও গুরুতর ক্ষেত্রে ব্যবহারে এটি নিয়ে গবেষণা করতে হবে।
মন্তব্য করুন