গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে হয়তো। কিন্তু গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে ঝাঁকুনি খেয়েছে। একটা বড় রাজনৈতিক দল (বিএনপি) নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এমনটি হয়েছে। সোমবার গাজীপুর প্রেস ক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, প্রার্থী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সেবা দেওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা, ভোটারদের তা যাচাই করতে হবে। 

সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নানা তথ্য তুলে ধরেন সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। এতে বলা হয়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৩৩৩ প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সুজন। প্রার্থীদের মধ্যে ২৯.৭৩ শতাংশ কোনো না কোনো মামলার আসামি। প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রসঙ্গে জানানো হয়, ৪০.২৪ শতাংশ প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। আট মেয়র প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর, একজনের এসএসসি এবং দু’জনের এসএসসির নিচে। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন তাঁর হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন স্বশিক্ষিত, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম এসএসসি ও জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী মো. রাজু আহাম্মেদ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বলে উল্লেখ করেছেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান (এলএলএম), জাতীয় পার্টি প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন (এমএসএস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান (তাকমিল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম (এমবিএ) ও হারুন-অর-রশীদ (এমএ)। 

সুজনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক আমজাদ হোসেনের উপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার শিশিরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের ২৪৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৯২ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে, ৩৯ জনের এসএসসি এবং ৪৩ জনের এইচএসসি। ৭৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে অর্ধেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে।

সংবাদ সম্মেলনে সুজনের নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘প্রার্থীর  যোগ্যতার পুরোপুরি তথ্য ভোটারের জানা উচিত। এতে ভোটার উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করতে পারেন। নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচিত ব্যক্তিকে অবশ্যই তাঁর জবাবদিহিতা, যোগ্যতা, স্বচ্ছতা এবং জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়। সেসব বিষয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও  ভোটারকে প্রার্থীর তথ্য জানতে হবে।’