মুখ স্কচটেপে সাঁটা। শরীরের ওপর কাঁথা। শোয়ার ঘরের খাটে হাত বাঁধা। মাথা কুপিয়ে করা হয় ক্ষতবিক্ষত। ঘরজুড়ে রক্তস্রোত। মৃত্যু নিশ্চিত করতে শরীরে দেওয়া হয় আগুন। মর্মন্তুদ এমন খুনের ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। হতভাগ্য ওই নারী রোকসানা আক্তার ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর গর্ভে ছিল যমজ ভ্রূণ। বুধবার বিকেলে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের জোড়বটতল রহমতেরপাড়া গ্রামের স্বামীর ঘর থেকে ওই গৃহবধূর পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী আনোয়ার হোসেন কিবরিয়া, ননদসহ তিনজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ওই নারীকে খাটের ওপর লাশ রেখে পোড়ানো হয়েছে।

উপজেলার ভাটিয়ারী মাদাম বিবিরহাট নেভি গেট খাদেমপাড়া এলাকার রিকশাচালক নুরুল আলম এক বছর আগে মেয়ে রোকসানাকে আনোয়ারের সঙ্গে বিয়ে দেন। বুধবার বিকেলে স্থানীয় লোকজন ঘরের ভেতর পোড়া লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন রোকসানার বাবাসহ স্বজনরা।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ আলামত দেখে মনে করছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কোপানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে পোড়ানো হয়েছে। হত্যাকারীরা নিজেদের বাঁচাতে এই কাণ্ড করেছে। তবে তদন্তের পর সব বেরিয়ে আসবে বলে জানান ওসি।

রোকসানার বাবা নুরুল আলম বশর বলেন, ‘মেয়েকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে নির্যাতন করত। স্বামীর ভগ্নিপতি হারুন ভেন্ডর এক বছর আগে জোর করে বিয়েতে বাধ্য করান। নিরুপায় হয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে হত্যা করেছে তারা।’

রোকসানার স্বামী আনোয়ারের ভগ্নিপতি হারুন ভেন্ডর মোবাইল ফোনে বলেন, ‘কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, আমরা জানি না। আনোয়ার কিবরিয়াসহ আমি অফিসে ছিলাম। খুনের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে।’