- সারাদেশ
- আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহী, না জাপা
সিলেট সিটি নির্বাচন
আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহী, না জাপা

সিলেট সিটি করপোরেশন ভবন
দলীয় সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন কারণে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন থেকে বর্তমান মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী সরে দাঁড়ানোয় পাল্টে গেছে ভোটের হিসাব। আরিফুল হক থাকলে তিনিই হতেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। এখন নৌকার প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মাহমুদুল হাসান। তবে তাঁদের সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল হানিফ কুটু। নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান যুক্তরাজ্য প্রবাসী হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগে তাঁর প্রভাব কম। এ কারণে মনোনয়ন নিয়ে ক্ষুব্ধ বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কুটুকে গোপনে সমর্থন দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কে– তা নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। কেউ বলছেন, নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন দলেরই বিদ্রোহী কুটু। আবার কেউ জাতীয় পার্টির কথা বলছেন। অবশ্য কুটু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন কিনা, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন পর্যন্ত। তাঁকে নির্বাচন থেকে সরাতে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। কুটু অবশ্য সমকালকে জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচন করবেন। মনোনয়নে দল সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় প্রার্থী হয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া অন্য প্রার্থীরা হলেন জাকের পার্টির জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র হিসেবে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল হানিফ কুটু, যুবদল কর্মী ছালাহ উদ্দিন রিমন, আবদুল মান্নান খান, সামছুন-নূর তালুকদার, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
এদিকে, আরিফুল হক প্রার্থী না হওয়ায় সিসিক নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটারদের আগ্রহ কমেছে। বিভিন্ন পেশার মানুষ ও ভোটাররা আগামী ২১ জুনের এ সিটি নির্বাচন একতরফা হবে বলে মনে করছেন।
আরিফুল না থাকায় অনেকটা নির্ভার হয়েই প্রচার চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। অন্যরা খুঁজছেন তাঁকে আটকানোর পন্থা। জাপার প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল একসময় বিএনপিতে ছিলেন। শিল্পপতি হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে। তিনি চেষ্টা করছেন আওয়ামীবিরোধী ভোট তাঁর ভাগে নিতে। ইসলামী আন্দোলনের মাহমুদুল হাসান দলীয় ভোটের বাইরে ইসলামী দলগুলোর ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসার চেষ্টা করছেন। আর দলীয় প্রার্থী নিয়ে নাখোশের বিষয়টি কাজে লাগাতে চাচ্ছেন কুটু। তাঁকে গোপনে সমর্থন জানানো একাধিক নেতাকর্মী সমকালকে জানান, মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ১০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁদের পেছনে ফেলে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান নৌকার মনোনয়ন পাওয়ায় অনেকে হতাশ হয়েছেন। প্রকাশ্যে কেউ বিরোধিতা না করলেও গোপনে তাঁরা কুটুকে মদদ দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, আওয়ামী লীগের বড় একটা অংশ কুটুকে ভোট দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ অবস্থায় কুটু নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন।
অবশ্য মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ সমকালকে বলেন, দলের কেউ নৌকার বিপক্ষে নেই। কুটুকে হিসাবে রাখছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, হয়তো তিনি সরে দাঁড়াবেন। সাবেক নেতা হিসেবে তাঁর নৌকার পক্ষে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, অথচ তিনি হাস্যকরভাবে প্রার্থী হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের আচরণে ক্ষুব্ধ জাপা প্রার্থী
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের অবস্থান নিয়ে হতাশা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাপার প্রার্থী বাবুল। বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, মঙ্গলবার নৌকার প্রার্থী কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, যা আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন