ভোলার উদ্বৃত্ত গ্যাস দেশের অন্য অংশে আনতে ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হচ্ছে, যা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না বলে দাবি করেছে এলপিজি অটোগ্যাস অ্যাসোসিয়েশন। সহজ প্রযুক্তির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে শিল্প খাতে, অথবা জাতীয় গ্রিডে এ গ্যাস সরবরাহ করারও আহ্বান জানিয়েছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ফিলিং স্টেশন উদ্যোক্তাদের সংগঠনটি।

শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী মো. সিরাজুল মাওলা বলেন, দেশের জ্বালানি সংকটের এ সময়ে ভোলার গ্যাস কিছুটা হলেও অর্থনীতির জন্য সহায়ক হবে। কিন্তু এ গ্যাসকে ডিপ্রেসারাইজ করে আবার সিএনজি কম্প্রেসরের মাধ্যমে কম্প্রেস (সংকোচন) করে পরিবহনের যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এতে অর্থনৈতিকভাবে ‘কোন লাভ’ হবে না।

ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে এনে তিতাসের আওতাধীন শিল্পকারখানায় সরবরাহ করতে সম্প্রতি বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ১০ বছর ইন্ট্রাকো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা দরে বিক্রি করবে। যদিও গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হওয়া বর্ধিত দর অনুসারে শিল্পে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা। সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম পড়ছে ৪৩ টাকা; অর্থাৎ ভোলার গ্যাস চলতি দামের চেয়েও বেশি মূল্যে বিক্রি হবে।

সিরাজুল মাওলা বলেন, ভোলার গ্যাসকে ১০০০ পিএসআই থেকে কম্প্রেসরের মাধ্যমে ৩০০০ পিএসআই চাপে কম্প্রেস করে মোবাইল স্টোরেজের মাধ্যমে আনা হলে কম্প্রেসন চার্জ অর্ধেকেরও কম হবে এবং ডিকম্প্রেসনের প্রয়োজন না হওয়ায় এ খরচ সাশ্রয় হবে। শতাধিক মোবাইল স্টোরেজ বাংলাদেশে বিভিন্ন সিএনজি স্টেশন থেকে বিভিন্ন গার্মেন্ট ও শিল্পে গ্যাস সরবরাহের কাজে বিদ্যমান আছে। সরকার চাইলে তাদের অনুমতি দিতে পারে, যারা ফিড গ্যাসের মূল্য (ঘনমিটার ১৭ টাকা) পরিশোধ করে নিজস্ব খরচে কম্প্রেস ও পরিবহন করে তাদের কারখানায় নিয়ে আসবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ ঘনমিটার গ্যাস প্রক্রিয়া করার জন্য দেশীয় ‘বুস্টার কম্প্রেসর’ এর পেছনে ব্যয় হবে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা। যেখানে সাশ্রয়ী পদ্ধতি অবলম্বন করলে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কম্প্রেস করতে খরচ হবে মাত্র ২ থেকে ৩ টাকা। অন্যদিকে দেশে বিদ্যমান একেকটি মোবাইল স্টোরেজ প্রতিবার ৩০০০ ঘনমিটার গ্যাস বহন করতে পারে। ভোলা থেকে ঢাকা ও আশপাশে যাতায়াত করতে প্রতি ট্রিপে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ ধরলে প্রতি ঘনমিটারে পরিবহন ব্যয় হবে মাত্র ৭ থেকে ৮ টাকা।